বর্তমানে স্কুল ভবন। নিজস্ব চিত্র
প্রায় তিন মাস হতে চলল। ভবন স্থানান্তরের জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে ‘নো-অবজেকশন’ ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছেন সালানপুরের পাহাড়গোড়া প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনও জমি হাতে না আসায় থমকে রয়েছে স্কুলভবন স্থানান্তরের কাজ। ফলে, বিপদ মাথায় নিয়ে পুরনো ভবনেই পড়াশোনা করতে বাধ্য হচ্ছে খুদেরা। এত দিনে জমির ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। যদিও সালানপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শুভদীপ টিকাদারের দাবি, জমির খোঁজ মিলেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই জমি স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ইসিএল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খনিতে ঘেরা সালানপুরের সামডি পঞ্চায়েতের পাহাড়গোড়া গ্রামটি বেশ ধসপ্রবণ। খোলামুখ কয়লাখনি সম্প্রসারণের জন্য পাহাড়গোড়া গ্রামের প্রায় ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে ইসিএল। অধিগৃহীত জমির মধ্যেই রয়েছে পাহাড়গোড়া প্রাথমিক স্কুলটিও। গ্রামের ২১টি পরিবারকে জমির দাম ও ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে জমি খালি করা হয়েছে। কিন্তু স্কুলভবন স্থানান্তরিত না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবকেরা। তাঁরা জানান, ১৯৭১ সালে তৈরি হয় পাহারগোড়া প্রাথমিক স্কুল। পাহাড়গোড়া গ্রাম ছাড়াও, আশপাশের বড়ধাওড়া, কুলকানালি, বিনোদকাটা, লালবাজার গ্রামের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ৭৭। বর্তমানে খনি সম্প্রসারণের কাজ পুরোদমে চলছে। ভূগর্ভে বিস্ফোরণ হচ্ছে। তাতে মাঝেমাঝে কেঁপে উঠছে স্কুলের মেঝে-দেওয়াল। মাটির তলা ফাঁপা থাকায় যে কোনও সময়ে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল স্থানান্তরের জন্য জেলা শিক্ষা দফতর গত ২২ নভেম্বর ‘নো-অবজেকশন’ ছাড়পত্র দিয়েছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে কাছাকাছি কোথাও খাস জমি দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু এত দিন পরেও সেই কাজটি করে উঠতে পারেনি সালানপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিলচন্দ্র মাজি। তিনি বলেন, ‘‘খুব ভয় করে। কয়লা তোলার জন্য মাটির তলায় বিস্ফোরণ ঘটানো বা যন্ত্র নামিয়ে মাটি কাটার কাজ হলে স্কুল ভবনটি কেঁপে ওঠে। মনে হয়, এই বুঝি ঘর ভেঙে পড়ল। আমরা চাই, অবিলম্বে ভবন নির্মাণের জন্য জমি দেওয়া হোক।’’ ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ-সহ প্রধান শিক্ষকের অফিস, একটি রান্নাঘর ও শৌচাগার নির্মাণের জন্য প্রায় তিরিশ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
শুভদীপবাবুর দাবি, ‘‘পাহাড়গোড়া গ্রামের কাছেই ১০ শতক খাস জমি মিলেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই জমি পছন্দও করেছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই জমি স্কুলের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy