সব্যসাচী মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার ত্রিপল ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল খুনের ঘটনায় নয়া মোড়! পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় ওই খুনের দু’দিনের মাথায় ঘটনাস্থলের কাছেই উদ্ধার হল ভোজালি, পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি কালো ব্যাগ। তাতে পলিথিনে মোড়া একটি প্যান্ট এবং মোবাইল চার্জারও ছিল। সব্যসাচী খুনের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্রের যোগ থাকতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, রায়নার দেরিয়াপুর গ্রাম থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে উচিতপুর গ্রামের সেচখালের জলে ওই ব্যাগটি ভাসছিল। ব্যাগের মধ্যে একটি ওয়ান শাটার এবং একটি সেভেনএমএম পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, ধারালো ভোজালি, মোবাইল চার্জার এবং একটি প্যান্ট ছিল। পুলিশ ব্যাগটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। উচিতপুরের বাসিন্দা বিজন ঢালির দাবি, শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ নিজের ধানের জমি দেখতে গিয়ে ওই ব্যাগটি দেখতে পান তিনি। বর্ধমানের কাড়লাঘাট রোডের ধারে একটি সেচখালের জলে সেটি ভাসছিল। বিজন বলেন, ‘‘খালের জলে একটা কালো ব্যাগ ভাসতে দেখে সেটি তুলেছিলাম। ব্যাগটা বেশ ভারী আর তার চেন খোলা ছিল। ব্যাগের ভিতর হাত দিয়ে দেখি পলিথিনে মোড়া একটি প্যান্ট। ব্যাগ থেকে প্যান্টটি বার করতেই দেখি নীচের দিকে ভোজালি, পিস্তলগুলো রয়েছে।’’ গ্রামে ফিরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য উৎপল মালিককে বিষয়টি জানান বিজন। উৎপলই রায়না থানার পাশাপাশি স্থানীয় মুগরা পঞ্চায়েতে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে ব্যাগটি নিয়ে যায় রায়না থানার পুলিশ।
শুক্রবার রাতে সব্যসাচীর খুনের তিন দিনের মাথায় এই অস্ত্রশস্ত্র ভর্তি ব্যাগ উদ্বার নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ব্যাগের সঙ্গে সব্যসাচী খুনের যোগ রয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে দেরিয়াপুরের পৈতৃক বাড়িতে খুন হন সব্যসাচী। সে দিনই বন্ধু রাজবীর সিংহের সঙ্গে গাড়িচালক আনন্দ সাউ এবং রাঁধুনি পার্থ সাঁতরাকে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। ঘটনার সময় বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। সেই সময় সব্যসাচীকে কেউ ডাকছে বলে ছাদ থেকে ডেকে নীচে নিয়ে যান আনন্দ। তার পরেই সব্যসাচীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন রাজবীর এবং পার্থ। সব্যসাচীকে তাঁরাই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সব্যসাচীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তদন্তকারীদের অনুমান, সব্যসাচীকে কুপিয়ে খুন করার পাশাপাশি গুলিও করা হয়। নিহতের দেহে গুলির চিহ্নও পেয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে আনন্দ এবং পার্থকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে দেরিয়াপুরের বাড়িতে গিয়েও ঘটনাস্থল থেকে রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করেছেন সিআইডি-র তদন্তকারী দল এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। এ ছাড়া, সিঁড়ি ও ছাদ থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি ওই বাড়ির দুই মহিলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সব্যসাচীকে খুনের সময় ৬ রাউন্ডের মধ্যে ১ রাউন্ড গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল। বাকি ৫ রাউন্ড গুলি জলে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy