—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের সামনে বিষধর সাপের ছোবলে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপের একটি আবাসিক বিদ্যালয় চত্বর। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্কুলের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করলেন অভিভাবকেরা। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে এল পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগে পরীক্ষা শেষে আবাসিক বিদ্যালয় থেকে দোকানে গিয়েছিল ১৩ বছরের সিদ্ধান্ত মান্ডি। দোকান থেকে আবার আবাসিক বিদ্যালয়ে ফেরার সময় স্কুলের ঠিক সামনে তাকে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ কামড়ায় বলে অভিযোগ। কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তা আর সাফাইয়ের দাবিতে স্কুলে তালা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন অভিভাবক তথা স্থানীয়রা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের ফুলঝোড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে গড়ে ওঠে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়। স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ২৭৮ জন। স্কুলের আবাসনেই থাকে তারা। কিন্তু অভিভাবকদের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে এই আবাসিক বিদ্যালয় আর হস্টেল আতঙ্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কারণ, স্কুল চত্বর জুড়ে অবাধে বেড়ে চলেছে আগাছা। পরিষ্কারের নাম নেননি কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, এর ফলে বিষাক্ত সাপ এবং জীবজন্তুর উপদ্রব বেড়েছে। গত ১ ডিসেম্বর কুলটির বাসিন্দা সিদ্ধান্ত পরীক্ষা দেওয়ার পর একটি দোকানে গিয়েছিল। সেখান থেকে আবার আবাসিক বিদ্যালয়ে ফিরছিল সে। তখনই একটি চন্দ্রবোড়া সাপের ছোবল খায় ছাত্রটি। অভিযোগ, দীর্ঘ সময় পর ওই পড়ুয়াকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়া স্থানান্তর করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। ৬ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সিদ্ধান্তের। ছাত্রকে সাপে কামড়ানোর পর ১০ দিন পেরিয়েছে। কিন্তু এখনও আগাছাতেই ঢেকে রয়েছে আবাসন এবং বিদ্যালয় চত্বর। সিদ্ধান্তের মৃত্যুর অনেক পড়ুয়াকে ইতিমধ্যে হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন অভিভাবকেরা। কিন্তু তাতেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
স্কুলে বিক্ষোভ এবং অভিভাবকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্কুল হস্টেলে দায়িত্বে থাকা শ্রাবণী সেনশর্মা বলেন, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। একাধিক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তাঁরা গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না। তাঁরা চাইছেন এ নিয়ে দ্রুত অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ দফতর পদক্ষেপ করুন। স্কুল আর আবাসন দুটি আলাদা দফতরের। তাই কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মহকুমা শাসকের দফতর থেকে আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে দুর্গাপুর মহকুমা শাসক দফতরের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল আসে। তারা আবাসিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে। স্কুলের অতিরিক্ত পরিদর্শক দীপক সরকার বলেন, ‘‘খুব দ্রুত সাফাই এবং পরিকাঠামোর উন্নত হবে এবং সমস্ত বিষয় মহকুমা শাসকের কাছে জানাব।’’ আধিকারিকদের আশ্বাসে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর স্কুলের গেটের তালা খুলে দেন অভিভাবকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy