মঙ্গলকোটের কুলশুনো গ্রামে জঙ্গি সন্দেহে ধৃতের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তবে তথ্যপ্রমাণ কিছু না মেলায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামের যুবক আনোয়ার শেখকে শুক্রবার চেন্নাই থেকে জঙ্গি-যোগের অভিযোগে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। অভিযোগ, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শাখা ‘শাহদাত’-এর সঙ্গে জড়িত আনোয়ার। চেন্নাইয়ে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে একটি লন্ড্রিতে কাজ করছিল সে। শনিবার দুর্গাপুর আদালত তাকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠায়।
মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামে অতীতেও জঙ্গি-যোগের অভিযোগ উঠেছে। খাগড়াগড় কাণ্ডের পরে মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া মাদ্রাসার নাম উঠে আসে গোয়েন্দাদের নজরে। তাঁরা জানতে পারেন, সেখানে যাতায়াত ছিল কুলসোনার বাসিন্দা কালাম শেখের। কালাম তখন পলাতক। সেই সময়েই আনোয়ারকে আটক করে এনআইএ। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। কালামের খোঁজ পেতে তিন লক্ষ টাকার পুরস্কারমূল্য ঘোষণা করেছিল এনআইএ। পরে কেরল থেকে তাকে ধরা হয়। খাগড়াগড় কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কালাম এখন জেলবন্দি।
সেই স্মৃতি মোছার আগেই ফের গ্রামের যুবকের বিরুদ্ধে জঙ্গি-যোগের অভিযোগ ওঠায় বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, গ্রামে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ কারও নজরে পড়েনি। যদিও গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, খাগড়াগড় কাণ্ডের সঙ্গে যোগ থাকা এক জঙ্গি চাঁইয়ের সঙ্গে আনোয়ারের যোগ ছিল বলে সন্দেহ করেছিলেন তদন্তকারীরা। এলাকায় থাকলেও বাড়ি থেকে বেশি বেরোত না সে। এলাকা থেকে কয়েক জনকে ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে নিয়ে গিয়েছে বলেও জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারের ছোটবেলায় তার মা মারা যান। বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার মেজো। লেখাপড়া বেশি দূর করেনি। আগে এলাকাতেই রাজমিস্ত্রির কাজ করত। পরে চেন্নাইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যায়। এখন সেখানে একটি লন্ড্রিতে কাজ করছিল। পরিবারের দাবি, নতুন বাড়ি করার স্বপ্ন ছিল আনোয়ারের। স্ত্রী রেজিনা বিবি বলেন, ‘‘আমার স্বামী জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না। শুক্রবার বিকেলে পুলিশ ফোন করে গ্রেফতারের কথা জানায়। গ্রামে কাজ ছিল না বলে স্বামী মাস ছয়েক আগে চেন্নাইয়ে কাজে যায়। ওকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।’’ আনোয়ারের মাসি জাবেদা বিবিরও বক্তব্য, ‘‘ছেলেটা খুবই নিরীহ। তিনটে মেয়ে রয়েছে। ও জঙ্গি হতে পারে না। বদনাম দেওয়া হচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা ভোলা শেখ জানান, গ্রামে কাজ না থাকায় অনেকেই ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। তাঁর দাবি, ‘‘খাগড়াগড় কাণ্ডের সময়ে আনোয়ারকে আটক করা হয়েছিল সন্দেহের বশে। নির্দোষ ছিল বলে পরে ছেড়ে দেয়। ওকে আবার সন্দেহের বশেই গ্রেফতার করা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy