Advertisement
E-Paper

পুনর্বাসনের বাড়ি থেকে অবাধে লুট

প্রকল্পের নোডাল এজেন্ট আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়নগরে ১,৭৮৮টি বাড়ির পরিকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে।

বিজয়নগরে এই বাড়িগুলি নিয়েই উঠেছে নানা অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

বিজয়নগরে এই বাড়িগুলি নিয়েই উঠেছে নানা অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫০
Share
Save

ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে তৈরি করা হচ্ছে বাড়ি। কিন্তু জামুড়িয়ার বিজয়নগরে তৈরি বেশির ভাগ বাড়িগুলি বর্তমানে বেহাল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, ওই বাড়িগুলির দরজা, জানলার কাচ, পাইপ ইত্যাদি চুরি হচ্ছে।

প্রকল্পের নোডাল এজেন্ট আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়নগরে ১,৭৮৮টি বাড়ির পরিকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৬০টি বাড়ি পুরোপুরি তৈরি। সেগুলির মধ্যে ১৫৬টিতে ধসকবলিত ছাতিমডাঙার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকি চারটি সম্পূর্ণ বাড়ি এবং ১,৬২৮টি অসম্পূর্ণ বাড়ি নিয়ে সমস্যা
তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম্পূর্ণ বাড়িগুলির বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দরজা, কাচের জানলা, পাইপলাইন বসানো হয়েছে। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দারা জানান, রক্ষী না থাকায় বাড়িগুলি বেহাল। দুষ্কৃতীরা জানলার কাচ, কাঠের দরজা খুলে নিয়ে যাচ্ছে। এ-ও অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই বাড়িগুলিতে অসামাজিক কাজকর্মও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

তৃণমূল পরিচালিত জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কৌস্তুভ চক্রবর্তীও জানাচ্ছেন, ওই বাড়িগুলি থেকে বেসিন, জলের ট্যাঙ্ক, লোহার গ্রিল, কাঠের দরজা চুরি হচ্ছে। তাঁর সংযোজন: “সরকারি সম্পত্তি অবাধে লুট হচ্ছে। পুলিশের ‘মিট মাই অফিসার’ কর্মসূচিতে জামুড়িয়া থানায় গিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। সিসি ক্যামেরা, হাইমাস্ট লাইট বসানোর আর্জি জানানো হয়েছিল। লাভ হয়নি।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার অবশ্য দাবি, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা
নেওয়া হয়।

১৯৯৮-এ সিটু নেতা তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ হারাধন রায় সুপ্রিম কোর্টে রানিগঞ্জ খনি এলাকায় ধস কবলিত এলাকার পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার দাবিতে মামলা করেছিলেন। তার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই পুনর্বাসন প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। এডিডিএ জানিয়েছে, ২০১২-র পরে বারাবনির দাসকেয়ারির দু’টি জায়গায়, জামুড়িয়ার বিজয়নগর ও অন্ডাল বিমানবন্দর এলাকায় মোট ১০,১৪৪টি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়।

কিন্তু ওই বাড়িগুলি কেন অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে? এডিডিএ-এর এক আধিকারিকের দাবি, দীর্ঘদিন টাকা না পাওয়ায় বেশ কয়েক মাস আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা বিজয়নগর ও দাসকেয়ারির দু’টি প্রকল্পের কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছে। ওই ঠিকা সংস্থা জানিয়েছে, পুরনো দরে কাজ করা যাবে না। দর বাজার অনুযায়ী ঠিক করতে হবে। এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিজয়নগরের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হবে। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকাগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্ব আবাসন দফতরের। কারণ, কোল ইন্ডিয়ার থেকে টাকা পেয়ে রাজ্যের আবাসন দফতরই এই কাজের মূল দায়িত্বে রয়েছে। চেষ্টা করেও আবাসন দফতরের কোনও আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jamuria

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}