Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Jnaneswari Express

ঠিক করেননি অমৃতাভ, দাবি স্বজনহারা পরিবারের

অমৃতাভের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা যদি সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনি ঠিক করেননি দাবি তাঁদের।

মায়ের সঙ্গে বিপ্লববাবু।

মায়ের সঙ্গে বিপ্লববাবু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কালনা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২১ ০৭:৪৩
Share: Save:

১১ বছর আগের সে দিনটি এখনও তাঁদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। কালনা শহরের দুই পরিবার সে দিন হারিয়েছিল মোট পাঁচ সদস্যকে। যে জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনায় তাঁদের প্রিয়জনেদের হারাতে হয়েছিল, সে ঘটনায় সম্প্রতি নিজেকে ‘মৃত’ দাবি করে সরকারি ক্ষতিপূরণ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কালনা মহকুমারই মন্তেশ্বরের বাসিন্দা অমৃতাভ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। কালনার দুই মুখোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যেরা বৃহস্পতিবার জানান, এমন কাণ্ডের কথা শুনে তাঁরা হতবাক। অমৃতাভের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা যদি সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনি ঠিক করেননি দাবি তাঁদের।

কালনার সিদ্ধেশ্বরী মোড় ও শ্যামরায়পাড়ায় বাস ওই দুই পরিবারের। তাঁরা নিকটাত্মীয়। ২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে রৌরকেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন দুই পরিবারের পাঁচ জন। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের আর এক আত্মীয়, ডুমুরদহের বাসিন্দা সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তিনিই জীবিত ফিরেছিলেন।

সিদ্ধেশ্বরী মোড় এলাকায় ছোট বাড়িতে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকেন ওই দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও মেয়েকে হারানো, ষাটোর্ধ্ব বিপ্লব মুখোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে বৃদ্ধা মা থাকায় আমি ওই অনুষ্ঠানে যেতে চাইনি। স্ত্রী আর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া মেয়ে সেখানে যাচ্ছিল। আর ফিরে আসেনি।’’ তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরে রেল তাঁর ডিএনএ পরীক্ষা করিয়ে স্ত্রী ও মেয়ের মৃত্যুতে ক্ষতিপুরণ দিয়েছিল। চাকরি দেওয়া হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নে বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘তখন আমার যা বয়স ছিল, তাতে বেশিদিন চাকরি করতে পারতাম না। চেয়েছিলাম, আমার সম্মতিতে এক ভাগ্নেকে সে চাকরি দেওয়া হোক, যাতে সে আমাদের দেখাশোনা করতে পারে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ তা মানেননি।’’

অমৃতাভ-কাণ্ড প্রসঙ্গে বিপ্লববাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার ভাগ্নে চাকরি পেল না। অথচ, জীবিত থাকা সত্ত্বেও এক জনের পরিবারের সদস্য চাকরি পেয়ে গেল! ভাবতেই কেমন অবাক লাগছে।’’ বাড়িতে এখন বিপ্লববাবু ও তাঁর মা তারাসুন্দরী মুখোপাধ্যায়ের দেখাশোনা করেন ছন্দা দাস নামে এক মহিলা। তিনি বলেন, ‘‘অমৃতাভের ঘটনা খবরে দেখেছি। কী ভাবে এমন কাণ্ড করল, ভেবে চমকে উঠেছি।’’

সিদ্ধেশ্বরী মোড় থেকে কিছুটা দূরেই শ্যামরায়পাড়ায় থাকেন বৃদ্ধা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় তিনি হারিয়েছিলেন ছোট ছেলে দেবযান মুখোপাধ্যায়, পুত্রবধূ অনন্যা মুখোপাধ্যায় ও বছর চারেকের নাতি দেবায়নকে। সন্ধ্যাদেবীর বড় ছেলে সন্দীপবাবু জানান, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে রৌরকেলায় আত্মীয়ের বাড়িতে আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানেই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছয়। ডিএনএ পরীক্ষার পরে, তাঁদের পরিবারও ক্ষতিপূরণের অর্থ পেয়েছে। চাকরি পেয়েছেন কি না, সে প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি নিজে রেলের কর্মী। চাকরি করার মতো আর অন্য কোনও সদস্য ছিলেন না।’’ অমৃতাভ-কাণ্ড প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যদি সত্যি এমন কাজ করে থাকে, ভুল করেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jnaneswari Express
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy