আসানসোলের সভায়। ছবি: শৈলেন সরকার।
শহিদ দিবসের প্রস্তুতি সভায় এসে কার্যত পুরভোটের মহড়া দিয়ে গেলেন তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রমণের নিশানায় বিজেপি তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
মঙ্গলবার আসানসোলের সিটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবস পালনের প্রস্তুতি সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘এক বছর আগে এখানে যে পদ্ম ফুটেছিল, তাতে এখন শেওলা পড়েছে। কারণ আসানসোলে এখন আর বাবুল সুপ্রিয়কে দেখা যায় না। নরেন্দ্র মোদীর কথায় মানুষ এঁদের ভোট দিয়েছিলেন। এই ভুঁইফোড় নেতাদের শিক্ষা দিতে হবে।’’
গত লোকসভা ভোটে রাজ্যে এক মাত্র আসানসোল আসনটিই নিজের ক্ষমতায় জেতে বিজেপি। আসানসোল পুরসভা অবশ্য তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণেই আছে। গত চার বছরে পুর এলাকায় কী কী উন্নয়ন হয়েছে তার লম্বা ফিরিস্তি তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ‘‘ওঁরা এই সব দেখতে পাচ্ছেন না। আসলে ওঁদের মাথা ঘুরে গিয়েছে। আমি কলকাতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেব, জেলায় মানসিক হাসপাতাল বানাতে। সেখানেই ওদের জায়গা করে দেওয়া হবে।’’
মোদী সরকারের দুই কর্মসূচি ‘স্বচ্ছ ভারত’ এবং ‘যোগ দিবস পালন’ নিয়েও টিপ্পনী কাটতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতুষ্পুত্র। তাঁর দাবি, ‘‘ভোটের আগে ওরা অনেক কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিলেও গত এক বছরে যোগাসন ও ঝাঁট দেওয়া ছাড়া আর কিছু হয়নি। বরং একশো দিনের প্রকল্পের টাকা থেকে অন্যান্য আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’ তার উপরে সিবিআই, আয়কর এবং এসএফআইও-র ভয় দেখিয়ে কেন্দ্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তৃণমূলের আর এক নেতা ইন্দ্রনীল সেন দাবি করেন, ‘‘ভারতে ‘আচ্ছে দিন’ আর আসবে না।’’
আসন্ন আসানসোল পুরভোটে জয় নিশ্চিত করার জন্য কর্মী-সমর্থকদের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন অভিষেক। দাবি করেছেন, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের জয়যাত্রা আসানসোল পুরভোটের জয় দিয়েই শুরু হবে। বিজেপি এবং তাদের নেতাদের বিষয়ে কর্মীদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ‘‘এরা যেন বাংলার মানুষদের আর প্রতারিত করতে না পারে। এদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।’’ পরে দিল্লি থেকে ফোনে বাবুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউ নোংরা কথা বললে আমাকেও যে বলতে হবে তার কোনও মানে নেই।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, তৃণমূল এবং তার ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ নেতাদের নির্মূল করতে না পারলে আসানসোলের উন্নয়ন হবে না। আসন্ন পুরভোটে তাঁরা সেই কাজটাই করে দেখাবেন।
অভিষেকের এই সভাতেও কিন্তু বিতর্ক এড়াতে পারেনি তৃণমূল। শিল্প সংস্থায় দাদাগিরির অভিযোগে যে যুব তৃণমূল নেতা অলোক দাসকে খাতায় –কলমে ‘বহিষ্কার’ করেছিল তৃণমূল, তিনিই এ দিন বাসে-ট্রেকারে করে সভায় লোক পাঠান। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, মোট ৪২টি বাস ও আটটি ট্রেকারে তিনি লোক পাঠিয়েছিলেন। সেগুলিতে জনসভার প্রচারের ফ্লেক্সের নীচে লেখাও ছিল ‘সৌজন্যে আলোক দাস’। নিজেও তিনি সভায় গিয়েছিলেন। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অবশ্য সব দায় এড়িয়ে বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু নেতা তৃণমূলের নামে ইচ্ছে মতো কাজ করে চলেছেন। কাল থেকে এই ধরনের কোনও কাজ ও প্রচারপত্রে কোনও নাম লেখা যাবে না। তবে অলোক দাস বহিষ্কৃত, তাই তাঁকে আমাদের বলার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy