বারান্দাতেই ক্লাস করল পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
প্রায় চল্লিশ বছর ধরে রেলের ভবনে চলে প্রাথমিক স্কুলটি। বৃহস্পতিবার আচমকা ঘরটি বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। সমস্যায় পড়েন শিক্ষক, পড়ুয়ারা। উপায় না থাকায় বারান্দাতে চলে ক্লাস। বন্ধ রাখতে হয় ওই ভবনে চলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিও। যদিও পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ধমান স্টেশনে বিপর্যয়ের পরে ভগ্নপ্রায় পুরনো ভবনগুলিকে নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এই ভবনটিকেও বিপজ্জনক ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আচমকা স্কুলভবন বন্ধ করার প্রতিবাদ জানিয়ে রেল দফতরকে চিঠি দিয়েছেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, ভবনটি বেহাল ঠিকই। কিন্তু না জানিয়ে আচমকা বন্ধ করে দেওয়াটা আমানবিক। তাঁর দাবি, ‘‘স্কুলটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই পাঁচ শতক জায়গা পুরসভার তরফে দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন ভবন তৈরি করতে একটু সময় লাগবে।’’ রেলের বিপজ্জনক গুদামগুলি আগে বন্ধ করা উচিত বলেও দাবি করেছেন তিনি।
স্কুল শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সাল থেকে কাটোয়া-বর্ধমান রোডের ধারে ওই ভবনে চলে কাটোয়া পশ্চিম চক্রের অধীনে থাকা ইস্টার্ন রেলওয়ে অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এই চক্রের অধীনে আরও ৭৬টি প্রাথমিক এবং ১৪টি উচ্চবিদ্যালয় আছে। ইস্টার্ন রেলওয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। রয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ১১০ জন পড়ুয়া।
শিক্ষকদের দাবি, এ দিন সকালে তাঁরা এসে দেখেন, পূর্ব রেলের তরফে স্কুল ভবনটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে বারান্দায় ক্লাস করান তাঁরা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মিতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রথমে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা এসে আমাদের বিষয়টি জানান। তারপরে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি বলি। আপাতত পাশের পঞ্চবটী প্রাথমিক স্কুলে স্থানান্তরিত হতে বলা হয়েছে।’’ স্কুলের আর এক শিক্ষিকা সৈয়দা সহেলী আফরোজও বলেন, ‘‘এ ভাবে স্কুল বন্ধ করা উচিত হয়নি। আমাদের একটু সময় দেওয়া উচিত ছিল। স্কুলের ভিতরে অনেক জরুরি কাগজপত্র রয়েছে। এখন শৌচালয় পাচ্ছি না, পানীয় জলের অসুবিধা হচ্ছে।’’
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে ২০১৬ সাল থেকেই সরে যাওয়ার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি বর্ধমানে যে ভাবে স্টেশনের একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে, সে রকম ঘটনা ঘটলে পড়ুয়াদের দায় কে নেবে? কাটোয়া স্টেশন ম্যানেজার অরূপকুমার সরকার বলেন, ‘‘ভবনটি খুবই বিপজ্জনক। যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সেই কারণেই ডিভিশনাল অথরিটির নির্দেশে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
কাটোয়া পশ্চিম চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শক ফ্যান্সি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলটি সিল করে দেওয়ায় খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা ছ’মাসের বাড়তি সময় চেয়ে রেলের কাছে আবেদন জানিয়েছি। স্কুলের জন্য পুরসভা জমি কিনে দিয়েছে। সেই জমিতে স্কুল গড়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy