রাস্তার এই অংশেই ধস নেমেছিল। নিজস্ব চিত্র।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের শিশুবাগান মোড়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি। তাই ওই পথ দিয়ে বড় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘুরপথে বড় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করায় তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগরেল কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ সেপ্টেম্বর শিশুবাগান মোড়ে রাস্তার একাংশে ধস নামে। তার পরে রাস্তার অর্ধেক ভেঙে সংস্কার করা হয়। কিন্তু এখনও বাকি অর্ধেক অংশ ভেঙে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়নি। দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে বলে সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এই অবস্থায় রানিসায়র বাইপাস হয়ে স্টেশন যাতায়াত করতে হচ্ছে রেলের সব পণ্যবাহী গাড়িগুলিকে। আর এতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে দাবি রেলের।
রানিগঞ্জের স্টেশন ম্যানেজার কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্টেশন দিয়ে ৪২টি বগি বিশিষ্ট মালগাড়ি যাতায়াত করে। বাইরে থেকে আসা একটি পণ্যবোঝাই মালগাড়ি খালি করতে প্রায় ছ’ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু এখনও পুরো রাস্তা সংস্কার না হওয়া, ঘুরপথে ‘বেহাল’ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা মালগাড়ি থেকে নামানো পণ্য ছোট গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি। তাতে স্টেশন খালি করতে তিন গুণের বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। একই কারণে যেখানে বালি একটি মালগাড়িতে বোঝাই করতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লাগত, এখন ৩৬ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে।
স্টেশন ম্যানেজার মনোজকুমার সিংহ জানান, অক্টোবর মাসে ১২টি পণ্যবোঝাই মালগাড়ি বাইরে থেকে এসেছে। রানিগঞ্জ থেকে সাতটি মালগাড়ি পণ্যবোঝাই করে অন্যত্র গিয়েছে। মনোজবাবুর দাবি, “মালগাড়ি খালি ও বোঝাই করতে অনেক বেশি সময় লাগায় পণ্য আমদানি ও রফতানি মিলিয়ে প্রায় ১৫টি মালগাড়ির যাতায়াত কমে গিয়েছে। কারণ, স্টেশনে আসা মালগাড়িকে অতিরিক্ত সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তাতে অন্য মালগাড়ি ঢোকানোর জায়গা থাকছে না। বিষয়টি রেলের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে কিছু বিধি আরোপ করে বড় মালবাহী যান চলাচলে প্রশাসন অনুমতি দিলে ভাল হয়। বণিক সংগঠন ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস’-এর সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া জানান, প্রশাসন বিষয়টিতে গুরুত্ব দিলে ভাল হয়। কারণ, রেলের পণ্য খালি ও বোঝাই করার কাজে রানিগঞ্জ শহরের অনেক মানুষ জড়িত। তাঁদের রুজিতেও প্রভাব পড়ছে বলে দাবি সন্দীপবাবুর।
ঘুরপথে যেতে তাঁদেরও সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ‘আমরাসোঁতা-পঞ্জাবি মোড় ট্রাক অ্যান্ড টিপার্স ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি দয়াশঙ্কর রায়। তিনি বলেন, ‘‘বাইপাসের কয়েকটি অংশ বেহাল। তা ছাড়া, বাইপাসের মাঝামাঝি এলাকায় থাকা রেল টানেল দিয়ে বড় পণ্যবোঝাই গাড়ি যেতে পারে না। পাশাপাশি, সব পণ্যবাহী বড় যান বাইপাস দিয়ে যাতায়াত করায় যানজট হচ্ছে। গন্তব্যে পৌঁছতে বেশি সময় লাগছে। ক্ষতির আশঙ্কায় গাড়ির সংখ্যা কমিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’ রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, সমস্যা মেটানোর জন্য রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদনজানানো হবে।
রানিগঞ্জের ওসি (ট্র্যাফিক) প্রসেনজিৎ বসাক বলেন, ‘‘যে অংশের কাজ এখনও বাকি আছে সেখান দিয়ে ভারী গাড়ি গেলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি জেলাপ্রশাসন দেখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy