Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

সার দিয়ে খুঁটি, বিদ্যুৎ কী আসবে না

পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনসার আলি খান। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সৌমেন দত্ত। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

পাথর উঠে বেহাল কাইতি থেকে উচালনপুরের রাস্তা। ছবি: উদিত সিংহ।

পাথর উঠে বেহাল কাইতি থেকে উচালনপুরের রাস্তা। ছবি: উদিত সিংহ।

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১০
Share: Save:

•পাঁইটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের চার-পাঁচ জায়গায় ফাটল। বহির্বিভাগ চালানো ভয়ের ব্যাপার। পরিকাঠামোগত উন্নয়নও প্রয়োজন। একই রকম ভাবে গোতান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও সামগ্রিক উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।

সঞ্জয় গুহ, মাধবডিহি

সভাপতি: আপনাদের সঙ্গে আমি একমত। রায়না ২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আমাদের হাতে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করার মতো অর্থ নেই। আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।

• খাঁহার থেকে ছোট বৈনান যাওয়ার পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল। শুধু ওই রাস্তা নয়, ব্লকের প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় তৈরি একটা রাস্তাও ভাল নয়। এমনকী, বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

রমা বন্দ্যোপাধ্যায়, খাঁহার

সভাপতি: সত্যিই রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। কাইতি হাসপাতাল থেকে উচালন পর্যন্ত রাস্তার হাল এতটাই খারাপ যে, বাস চলাচল কমে গিয়েছে। বেশ কিছু রাস্তায় বাস ঘুরপথে যাচ্ছে। অথচ এই একএকটা রাস্তার উপর চার-পাঁচটা পঞ্চায়েতের মানুষ নির্ভরশীল। আমাদের আবেদনে সংশ্লিষ্ট দফতর বারবার আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু কাজ সেভাবে হচ্ছে কই?

•নোটের চোটে আমাদের হাসফাঁস অবস্থা। সমবায় টাকা নিচ্ছে না। ধান কাটার সমস্যা হচ্ছে, তেমনি রবি চাষও শুরু করতে পারছি না। কিছু একটা করুন। তার উপর এলাকার বিনোদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল অবস্থা। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতর অসামাজিক কাজকর্মও বাড়ছে দিনদিন।

মির্জা সাকির হোসেন, পহেলানপুর

সভাপতি: শুধু আপনি কেন টাকার অভাবে তো আমরা সবাই ভুগছি। এই ক্ষতি কী ভাবে পূরণ হবে কেউ জানে না। আর বিনোদপুরের বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঠিক করার আর্থিক অবস্থা আমাদের নেই। তবে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য ও অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।

• কামারহাটি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সজল ধারা প্রকল্প নেই। এখনও চকপঞ্চানন উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে বিপজ্জনক অবস্থায় মাটির ঘর রয়েছে। আবার আমাদের গ্রামে একশো দিনের কাজ করেও গত বছর থেকে পারিশ্রমিক পাননি দেড়শো জন শ্রমিক। বিদ্যুতের বিলের সমস্যায় ভুগছে সাবমার্সিবল পাম্পগুলি। রবিচাষ নিয়ে চিন্তায় রয়েছি আমরা। উপায় কী?

সৌমেন ভট্টাচার্য, কামারহাটি

সভাপতি: পানীয় জল দিতে না পারা মানে তো পরিষেবার কিছুই দিতে পারছি না। সজল ধারা করার চেষ্টা করছি। স্কুলের ব্যাপারে পরিদর্শককে বলা হয়েছে। আর একশো দিনের কাজের টাকা পাওয়ার জন্য কী না করেছি, কিন্তু এখনও শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারিনি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুতের বিলের সুরাহা করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলা হবে।

• আমাদের ছৌ নাচের সংস্থা রয়েছে। সংস্থার ঘরেই আইসিডিএস কেন্দ্র চলত। কিন্তু পাঁচ বছর আগে ঘর ভেঙে গিয়েছে। আইসিডিএসও উঠে গিয়েছে। আমাদের পাড়ার ছেলেরা পড়াশোনা, পুষ্টি দু’দিক থেকেই থেকে মার খাচ্ছে। আবার আমাদের গ্রাম থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে ভোট গ্রহণ কেন্দ্র। অথচ আমাদের পাশের স্কুলে ভোট হয়। আমরা কাছের স্কুলে ভোট দিতে চাই। এ ছাড়া আমাদের নাচের সরঞ্জাম রাখার স্থায়ী ঘরও নেই।

বিশ্বরূপ বেজ, কাইতি

সভাপতি: আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট দফতরে স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেদন করতে হবে। তারপরে আমরা দেখে নেব। আর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নিয়ে আপনাদের সমস্যা সর্বদলীয় বৈঠকে তুলব। তবে কমিউনিটি সেন্টার গড়ার মতো আমাদের নিজস্ব তহবিলে টাকা নেই। একটু অপেক্ষা করতে হবে।

• রাস্তার ধারে সার দিয়ে খুঁটি রয়েছে, কিন্তু বিদ্যুৎ কোথায়? এখনও গ্রামের প্রচুর মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। তাঁরা খুব সমস্যায় পড়ছেন।

পুতুল মণ্ডল, চকভুষা

সভাপতি: একটু ধৈর্য্য ধরুন, বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ ঠিক পৌঁছে যাবে। আর একটু উদ্যোগ করলেই তো অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

• রায়না ২ ব্লকে ১৩৭টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। কয়েকটি ছাড়া কোনও বিদ্যালয়েই পরিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতিকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি কম ছাত্র রয়েছে এমন স্কুলে মিড-ডে মিল চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে।

অভিজিৎ ভট্টাচার্য, বড় বৈনান

সভাপতি: পরিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য আমরা স্কুলে স্কুলে সাবমার্সিবল বসাতে শুরু করেছি। আর ওই সব স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে একটি স্কুল করার প্রস্তাব দেওয়া হবে।

• আলমপুর গ্রামের খেলার মাঠ সংস্কারের খুবই প্রয়োজন রয়েছে। এই গ্রামেই ২০১৪ সালে আইটিআই তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দু’বছর পার হয়ে গেলেও সে বিষয়ে এক ফোঁটাও এগোয়নি সরকার।

শেখ হান্নান আলি, আলমপুর

সভাপতি: খেলার মাঠ কী ভাবে সংস্কার করা যায় সে ব্যাপারে আমরাও উদ্যোগী হয়েছি। তবে আইটিআই নিয়ে আমরাও অন্ধকারে রয়েছি।

অন্য বিষয়গুলি:

electricity crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy