প্রতীকী ছবি।
ঘটনার দিন দু’য়েক আগে পঞ্চায়েত অফিসে এনে চিনিয়ে দেওয়া হয়েছিল ‘শিকার’। দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ছেলে চঞ্চল বক্সীকে খুনের অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেফতারের পরে, এমনই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকে মহম্মদ ইমরান কুরেশি এবং বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে শেখ শের আলি নামে দু’জনকে ধরা হয়। শনিবার তাঁদের বর্ধমান আদালতে তুলে ১২ দিন হেফাজতে চায় পুলিশ। বিচারক আট দিনের পুলিশ হেফাজত দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ শের আলি দুবরাজপুরের দোবান্দা এবং মহম্মদ ইমরান কুরেশি দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় এলাকার ভবানীপল্লির বাসিন্দা। ইমরানের মোটরবাইকে চেপেই শের আলি চঞ্চলের উপরে গুলি চালায় বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ধৃতেরা তাঁদের কাছে জেরায় পাঁচ রাউন্ড গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে বলেও দাবি পুলিশের। জানা গিয়েছে, শের আলি পরিবার নিয়ে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। ওই এলাকাতেই একটা মাংসের দোকান রয়েছে ইমরানের। সে সূত্রেই তাদের পরিচয়। দু’জনের নামে খুনের চেষ্টা, ডাকাতি, মাদক সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন থানায়, দাবি পুলিশ সূত্রের। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সপ্তাহ দু’য়েক আগে আউশগ্রামের গেঁড়াইয়ে দলের এক নেতার বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করে বাবা শ্যামল বক্সীকে নিয়ে মোটরবাইকে ফেরার সময়ে খুন হন চঞ্চল। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, ঘটনায় ‘বিজেপির হাত’ রয়েছে। পরে, তৃণমূলেরই দুই পঞ্চায়েত সদস্য আসানুল মণ্ডল ও মনির হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি আসানুলই শের আলিকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে এনেছিল বলে দাবি পুলিশের।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই পঞ্চায়েতের কাজের টেন্ডার নিয়ে চঞ্চলের সঙ্গে আসানুলের গোলমাল চলছিল। চঞ্চল অঞ্চল সভাপতির পদ পেতে পারেন আন্দাজ করেই আসানুল খুনের পরিকল্পনা করেন বলে পুলিশের অনুমান। পুলিশের দাবি, জেরায় শের আলি তাঁদের জানায়, আসানুলের সঙ্গে বছর ছয়েক ধরে তার যোগাযোগ রয়েছে। দুর্গাপুর আদালতে তাদের আলাপ হয়। খুনের ঘটনার দু’দিন আগে তাকে পঞ্চায়েত অফিসে নিয়ে গিয়ে চঞ্চলকে চিনিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার দিন ভাতকুন্ডা এলাকায় কুনুরের সেতুতে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে শিকারকে দেখতে পেয়ে পিছু ধাওয়া করে তারা। উলুগোড়ের জঙ্গলের কাছে খুব কাছ থেকেই গুলি করা হয় ওই যুব নেতাকে, দাবি পুলিশের।
পুলিশের দাবি, শের আলি জেরায় জানিয়েছে, তদন্তকারীদের চোখে ধুলো দিতে ঘটনার পরেই জামা পাল্টে ফেলে সে। তখনই পড়ে যায় আগ্নেয়াস্ত্রটি। ঘটনাস্থল থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারও করে পুলিশ। সেটি থেকেই গুলি চালানো হয়েছিল, না কি অন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তা দেখছে পুলিশ। ঘটনাক্রম স্পষ্ট করতে ধৃতদের এক সঙ্গে জেরা করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘বোঝা যাচ্ছে, পরিকল্পনা করেই আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। খুনের সঙ্গে যুক্ত কেউ যাতে রেহাই না পায়, সেটা দেখতে পুলিশের কাছে আর্জি জানাচ্ছি।” তৃণমূলের আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘তদন্তে আমাদের আস্থা আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy