প্রিয়াঙ্কা সরকার। নিজস্ব চিত্র।
চিত্তরঞ্জন: বাবা এক সময়ের জিমন্যাস্ট। তবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সফল হলেও চাকরি জোটেনি। অগত্যা সব্জির দোকান করেই কোনও রকমে সংসার চালান তিনি। কিন্তু দারিদ্র খেলাধুলোর নেশাটা কেড়ে নিতে পারেনি চিত্তর়ঞ্জনের উত্তরামপুর-জিতপুর এলাকার সরকার পরিবারের থেকে। আর তাই বোধহয় বাবা কানু সরকারের অপূর্ণ ইচ্ছে পূরণ করতে মাঠে নেমে পড়েছেন প্রিয়াঙ্কা। চলতি বছরে জেলাস্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দু’শো মিটারে দ্বিতীয় ও চারশো মিটার দৌড়ে প্রথম হয়েছেন তিনি।
দেশবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া প্রিয়াঙ্কার সারা দিনের রুটিনটা কী রকম? ভোর হতে না হতেই প্রিয়াঙ্কা ছুট দেন চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভের ওভাল গ্রাউন্ডে। ততক্ষণে বাঁশি হাতে মাঠে চলে এসেছেন কোচ দীনেশ প্রসাদ। রেলের ‘লং রানার’ বলে পরিচিত দীনেশবাবুও ছাত্রীর অধ্যবসায় দেখে এখন থেকেই অনেক স্বপ্ন দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রিয়াঙ্কা ভাল প্রশিক্ষণ পলে আরও অনেক বড় মঞ্চে সুযোগ পাবে। খেলার মঞ্চে আমি যা পারিনি, সে সবও এক দিন ছুয়ে ফেলবে ও।’’
কোচের এই আশার কথা জানেন প্রিয়াঙ্কাও। তিনি জানিয়ে দেন, জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার জন্য এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মাটির এক চালা ঘরে বসে প্রিয়াঙ্কার বাবা কানুবাবুও বলে ওঠেন, ‘‘চাকরি পাইনি। তাই সব্জির দোকান দিয়েছি। মেয়েই এখন আমার আশা-ভরসা।’’ তবে সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, বিপিএল কার্ডের যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পঞ্চায়েতে বারবার দরবার করেও ফল মেলেনি।
দৌড়ে মন দিতে গিয়ে পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে না? শুনেই প্রিয়াঙ্কা জানিয়ে দেন, পড়াশোনায় এক দিদিমণি সাহায্য করেন। হ্যারিকেনের আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে, প্রিয়াঙ্কার পাশে রাখা পায়ের বুটটা যেন জানিয়ে দেয়, সাফল্যের লাস্ট ল্যাপের জন্য দৌড় চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy