ভেঙেচুরে গিয়েছে রাস্তা। ধাদকায়। ছবি: পাপন চৌধুরী।
পাথর খাদানের জেরে বিপজ্জনক হয়েছে রাস্তা। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ধসের আতঙ্কে ভুগছেন বাসিন্দারা। দ্রুত পদক্ষেপের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কাছে গণসই সংবলিত লিখিত আর্জি জানিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। আসানসোল পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেষ সীমানা বড়পুকুরি এলাকার ঘটনা। তবে যে খাদানগুলি নিয়ে অভিযোগ, সেগুলি বৈধ না অবৈধ, তা জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের ধাদকা থেকে একটি পিচ রাস্তা বাঁ দিকে বাঁক নিয়ে সোজা রঘুনাথচটি হয়ে বারাবনির লালগঞ্জ ও দোমহানি পর্যন্ত গিয়েছে। এই রাস্তার ধার ঘেঁষেই কয়েক বছর আগে গজিয়ে উঠেছে একাধিক পাথর খাদান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এগুলির জন্য রাস্তা জুড়ে বড় গর্ত হয়েছে। সমস্যা তৈরি হচ্ছে যাতায়াতে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
এলাকাটির চারপাশে রয়েছে, ধাদকা, মনোহরবহাল, মদনমোহনপুর, পাঁচগাছিয়া, বিজারি-সহ প্রায় ১৫টি গ্রাম ও বস্তি অঞ্চল। এখানে রয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দা। তাঁদের একমাত্র যাতায়াতের ভরসা ওই রাস্তাটি। এ ছাড়া, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ডান দিকের মোড় দিয়ে ধাদকা হয়ে প্রতি দিন কয়েকহাজার যানবাহন ওই রাস্তা ধরে সহজেই লালগঞ্জ, দোমহানিতে যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম শর্মার ক্ষোভ, ‘‘রাস্তার সমস্যার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ও প্রশাসনের কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। রাস্তাটি খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। আশা করি, দ্রুত রাস্তা সংস্কারে পদক্ষেপ করা হবে।’’
পাশাপাশি, বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাস্তার ধার ঘেঁষে ভূগর্ভস্থ কালো পাথর কেটে তুলে নেওয়ার ফলে, রাস্তার তলা ফাঁপা হয়ে গিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে তা ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে কোনও নিয়ম না মেনে খাদানগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর ফলে, পাথরের টুকরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। ধুলোয় ঢাকছে আশপাশের এলাকা।
এই অবস্থায় বাড়ির মেঝে, চৌবাচ্চায় ধুলোর পুরু আস্তরণ পড়ছে বলে জানান বাসিন্দারা। সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়েও দেখা গেল, পাথরের সাদা গুঁড়োয় ঢেকে গিয়েছে বড়পুকুরি-সহ আশপাশের অঞ্চল। গাছের পাতাগুলিও সাদা হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অতীতেও পদক্ষেপ করার দাবিতে প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে ফল হয়নি।
কিন্তু এই খাদানগুলি বৈধ না অবৈধ, তা স্পষ্ট করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খাদানগুলি অবৈধ ভাবে চলছে। কিন্তু এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অপ্রতিম ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ করা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি, খাদান মালিকদের খোঁজে এলাকায় থাকা কয়েকটি অফিসে গেলেও তাঁদের দেখা মেলেনি। মুখ খুলতে চাননি অফিসে থাকা কর্মীরাও। তবে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির আশ্বাস, ‘‘দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হবে। দূষণ রোধেও পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy