Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
রাজনৈতিক দলগুলির দিনলিপি বাড়াচ্ছে ক্ষোভ
Coronavirus in West Bengal

বিধি ‘না মেনেই’ কর্মসূচি

রবিবার জেলায় ৩৮ জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। যা এখনও পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর মাঝেও জনসংযোগ করতে বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। সভা, ত্রাণ বিলি, প্রচারপত্র ছড়িয়ে উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার করছেন। এর ফাঁকেই জেলায় চড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে এই সব কর্মসূচি নিয়ে। বিশিষ্টজন থেকে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যে ভাবে ভিড় হচ্ছে তাতে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় উঠেছে। জনপ্রতিনিধিদের হুঁশ না থাকলে জনতার হুঁশ ফিরবে কী ভাবে, সে প্রশ্নও করেছেন তাঁরা। দলগুলিও দুষছে একে-অপরকে।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আবেদন করা হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) বিষয়টি দেখছেন।’’

রবিবার জেলায় ৩৮ জন করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। যা এখনও পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ। ওই দিনই বর্ধমান শহরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের খাদ্যদ্রব্য বিলির কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে ‘হুড়োহুড়ি’। বেশির ভাগের মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না। পারস্পরিক দূরত্বও মানা হয়নি বলে অভিযোগ। এর আগেও বর্ধমান শহর তো বটেই, জেলার নানা প্রান্তে দলের নানা কর্মসূচিতে একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, জনসংযোগের নামে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি দিচ্ছে তৃণমূল। প্রচারপত্র দেওয়ার সময়ে এক-একটি বাড়িতে ১৭ থেকে ২৫ জনের দলও যাচ্ছেন। তাঁদের অধিকাংশের মুখেও ‘মাস্ক’ থাকছে না। সামাজিক দূরত্ব মানারও বালাই নেই, দাবি তাঁদের।

বিজেপির গৃহসম্পর্ক অভিযানে বাড়ি-বাড়ি যাওয়া বা সম্প্রতি বর্ধমান থানায় বিক্ষোভেও বিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে। কাটোয়ায় দলের সভাপতির বাড়ির সামনে বিক্ষোভেও পারস্পরিক দূরত্বের বালাই ছিল না। একই ভাবে আমপানে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বামেদেরও নানা জায়গায় কর্মসূচি করতে দেখা যাচ্ছে। দল না মানলেও সব জায়গায় কর্মীদের মুখে ‘মাস্ক’ দেখা যাচ্ছে না। ভাতার, মেমারিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে মিছিলেও দেখা গিয়েছে একই দৃশ্য। আবার নানা দলের যোগদান অনুষ্ঠানেও দেখা যাচ্ছে ভিড়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার বেশ কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, “জীবিকার জন্যে বাড়ির বাইরে পা রাখতেই হচ্ছে। তার পরে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক কর্মসূচি, আবার বাড়িতেও আসছেন নেতা-কর্মীরা। এ রকম পরিবেশে বাড়ি-বাড়ি আসার প্রয়োজনটা কী? পুরোটাই বিরক্তিকর। এমনকি, বৃষ্টির মধ্যেও জনসংযোগে বিরাম নেই।’’

তবে অভিযোগ মানছে না বিজেপি। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, “করোনা-সংক্রমণ এড়ানোর জন্য আমরা ‘ভার্চুয়াল সভা’ করছি। কিন্তু তৃণমূল এই সব সভা করে যেন করোনাকে আহ্বান করছে!” দলের আর এক সাংগঠনিক জেলার (বর্ধমান সদর) সাধারণ সম্পাদক সুনীল গুপ্তের কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রীর কথা তাঁর দলের লোকেরাই মানছেন না। সই কারণে রাস্তায় ভিড় করে সভা করে অহেতুক করোনা-আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তৃণমূল।’’

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের আবার দাবি, “আমরা নিয়মনীতি মেনে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছি। নিয়মনীতি কারা মানছেন না, সেটা জনগণ দেখতেই পাচ্ছেন।’’

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর দেবু টুডু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই আমাদের কর্মসূচি হচ্ছে। কোথাও কোথাও পথচলতি মানুষজন উৎসাহ নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন বা আমাদের সঙ্গে পা মেলাচ্ছেন। নজরে আসা মাত্র আমরা তাঁদের সরিয়ে দিচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy