ফাইল চিত্র।
পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের ভয় দেখাতেই গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীদের একাংশ। পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরা সাধারণত প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না। এখানে গুলি ছোড়ার কারণ প্রাণে মারা নয় বরং ভয় দেখানো, দাবি তাঁদের।
বুধবার মাঝরাতে পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরের কাছে এসটিকেকে রোডে অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক ধরতে যাওয়া পরিবহণ দফতরের কর্মীদের গাড়িতে গুলি চালানো হয়। কেউ হতাহত না হলেও কর্মীদের নিরাপত্তা, কী কারণে হামলা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দফতরের কর্তাদের অনুমান, এক একটা অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ি থেকে যে পরিমাণ জরিমানা করা হচ্ছে, তা নিয়ে আক্রোশ ছিল ব্যবসায়ীদের একাংশের। সেই কারণেই এই ঘটনা।
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শান্তনু মজুমদার এবং পুলক রায় ওরফে পিকলু নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শান্তনুকে আগেই পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। এ দিন পিকলুকে আদালতে তোলা হলে তাঁকে চার দিনের হেফাজতে পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি, পরিবহণ কর্মীদের শরীরে লাগানো ক্যামেরা থেকে প্রায় ২৭ মিনিটের ফুটেজ মিলেছে। হামলাকারী ও তাঁদের গাড়ি সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পরিবহণ দফতরের আধিকারিক প্রীতম কর্মকার লিখিত অভিযোগে হামলাকারী গাড়িটির নম্বর উল্লেখ করেছেন। সেই তথ্য অনুযায়ী পারুলিয়ার বাসিন্দা শান্তনু গাড়ির মালিক। তবে গাড়িটি আটক করার সামনে কোনও নম্বর প্লেট ছিল না, জানিয়েছে পুলিশ। পরিবহণ দফতরের ওই গাড়িতে থাকা এক জন এ দিন জানান, রামদাসপুরের কাছে অতিরিক্ত পণ্যবাহী বেশ কিছু ট্রাক ও লোকজন দেখে ছবি তুলে সরে আসার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কিছুটা এগোনোর পরেই উল্টো দিক থেকে একটি গাড়ি থেকে একাধিক গুলি করা হয়। একটি গুলি বিঁধে যায় বনেটে। চালকের পিছনের আসনে হামলাকারী বলেছিল বলে অভিযোগ।
ওই কর্মী জানান, গাড়িটি পেরিয়ে গিয়ে আবার ঘুরে এসে তাঁদের পিছু ধাওয়া করে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচতে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁরা।
ওই কর্মী বলেন, ‘‘ঘটনার কথা মনে করলেই শিউরে উঠছি। পিছনের গাড়িটা প্রায় গায়ে-গায়ে চলছিল। আমাদের অভিজ্ঞ চালক গাড়িটিকে বাঁ দিকে চেপে খানিকটা এগিয়ে যান। পূর্বস্থলী এবং নাদনঘাট থানার পুলিশকে ফোন করা হয়। শ্রীরামপুর এলাকায় কৃষিমেলার কাছে রাস্তার ধারে পুলিশের ভ্যান দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি।’’ পুলিশ তাঁদের কালনা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। ততক্ষণ ঘটনার অনেকটাই রেকর্ড হয়ে যায়বডি ক্যামেরায়।
পরিবহণ দফতরের দাবি, সাধারণত সন্ধ্যায় অভিযান চালানো হলে গাড়িতে ক্যামেরা নেওয়া হয় না। রাত ১১টার পরে অভিযান বলে ক্যামেরা সঙ্গে ছিল। হেমায়েতপুর মোড় ছাড়ার পরেই সেটি চালু করে দেন তাঁরা। এ দিন জেলাশাসকের কার্যালয়ে পরিবহণ দফতরের তিন জনের কমিটির বৈঠক হয়। জেলা পরিবহন আধিকারিক, এক অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ ছিলেন সেখানে।
বিধায়ক জানান, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বেআইনি কারবার রুখতে বডি ক্যামেরার ব্যবহার বাড়ানো হবে। প্রতিটি অভিযানে পুলিশ এবং ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy