সেই টালির বাড়ি। (ইনসেটে) উদ্ধার হওয়া কিছু আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
ফের অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল আসানসোল শিল্পাঞ্চলে। কুলটির ডিসেরগড়ের পরে, এ বার বার্নপুরের আজাদনগর। সেখানে কার্যত ঘরের মেঝে কেটে ‘বাঙ্কার’ বানিয়ে ওই কাণ্ড চলছিল বলে অভিযোগ। সোমবার দুপুরে হিরাপুর থানার পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। গ্রেফতার করা হয় তিন জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা হল— বিহারের মুঙ্গেরের মহম্মদ ফিরোজ ও মহম্মদ তনভির, বাড়ির মালিক মহম্মদ জাভেদ হুসেনের স্ত্রী হিরাপুরের রহমতনগরের নয়াবস্তির ফরজানা খাতুন। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে, তিনটি সম্পূর্ণ তৈরি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল-সহ সম্পূর্ণ ম্যাগাজিন। ১০টি অসম্পূর্ণ পিস্তল-সহ ১৭টি ম্যাগাজিন ও তিনটি কার্তুজ। পাশাপাশি, কিছু যন্ত্রাংশও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জাভেদের খোঁজ চলছে।
পুলিশের দাবি, কয়েক দিন আগে একটি সূত্র মারফত খবর আসে, আজাদনগর এলাকায় একটি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা চলছে। নির্দিষ্ট তথ্য হাতে পাওয়ার পরে, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। মহল্লার ঠিক মাঝখানে একটি ঘিঞ্জি গলির শেষ প্রান্তে পাশাপাশি কয়েকটি টালির ঘরের একটিতে কারখানাটি চলছিল বলে দাবি। যে বাড়িতে অস্ত্র কারখানা গড়ে উঠেছে, সে বাড়ির মালিক মহম্মদ জাভেদ পুলিশ পৌঁছনোর আগেই পালিয়ে গিয়েছে বলে দাবি।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, “তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।” তবে কত দিন ধরে এখানে কারখানা চলছে, অস্ত্রগুলি কোথায় বিক্রি করা হয়ে থাকে— এ সব বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাননি ডিসিপি অভিষেক।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ঘরের মধ্যে দেওয়ালের গা ঘেঁষে মেঝে কেটে একটি ‘বাঙ্কার’ তৈরি করা রয়েছে। সম্ভবত, সেখানে অস্ত্র বানানো হত। বলে না দিলে, মেঝে কেটে ওই ভাবে ‘বাঙ্কার’ বানানো হয়েছে, তা সাধারণ ভাবে কেউ বুঝতে পারবে না। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় এক বাসিন্দা দাবি করেছেন, দেখে মনে হচ্ছে, অনেকদিন ধরেই কারখানা চলছে। তবে কবে থেকে তা চলছে, তাঁরা জানেন না। গৃহকর্তার যোগসাজস ছাড়া, এ ভাবে অস্ত্র কারখানা চলতে পারে না, বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের। তাঁদের আরও দাবি, পুলিশি অভিযানের সময়ে, ওই কারখানায় চার জন ছিল। পুলিশ দেখেই দু’জন পালিয়ে যায়। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, জাভেদ পরিবার নিয়ে এখানে থাকতেন। তাঁদের ঘরে এমন কাজ চলতে পারে, তা ভাবতেই পারছেন না দাবি পড়শিদের একাংশের।
এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর বরাকরে ডুবুরডিহি চেকপোস্টে আস মহম্মদ নামে এক যুবকের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ১ অক্টোবর কুলটির ডিসেরগড়ের কারবালা লাগোয়া, দামোদর নদ লাগোয়া এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে অস্ত্র কারখানার হদিস পায় পুলিশ। এদের সঙ্গে আজাদনগরের কোনও যোগ আছে কি না, পুলিশ তা এখনই কিছু জানাতে পারেনি। পরবর্তীকালে তদন্তে তা জানা যাবে, বলে জানিয়েছেন ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy