তদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। নিজস্ব চিত্র
আততায়ী এক না একাধিক, সিআইডি-র হস্তছাপ বিশেষজ্ঞেরা ঘুরে যাওয়ার পরে এটাই প্রশ্ন পুলিশের। বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্ধমান শহরের তেজগঞ্জের স্কুল রোডের বৃদ্ধ খুনের ঘটনায় ‘খুনি’র সংখ্যা এক জনই, প্রাথমিক ভাবে মনে করেছিল পুলিশ। কিন্তু শুক্রবার সকালে ঘণ্টাখানেক ধরে সিআইডি-র বিশেষজ্ঞ দল অকুস্থলে গিয়ে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেন। তাঁদের দাবি, রক্তাক্ত দেহের পাশে এক জনের স্পষ্ট উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। আরও এক জনের পায়ের ছাপও তাঁরা লক্ষ্য করেছেন। তবে পুরোটাই আরও খুঁটিয়ে পরীক্ষার পরে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে, দাবি তাঁদের।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি তদন্তকারীদের। পুলিশের দাবি, সমস্ত প্রশ্নের উত্তর না মিললে আততায়ীর কাছে পৌঁছনো কঠিন। তার জন্য নিহত গোরাচাঁদ দত্তের স্ত্রী মীরাদেবীই বড় সহায় তাঁদের। পুলিশের দাবি, তিনিই ‘আততায়ী’কে দেখেছিলেন। আততায়ীর সঙ্গে কথাও হয়েছে তাঁর।
এ দিন শহরের জিলিপিবাগানে বোনের বাড়িতে বসে মীরাদেবী অবশ্য দাবি করেন, “মাঝবয়সী ছেলেটির মুখ মনে পড়ছে না। আর ঘরে টাকাপয়সা, গয়নাগাঁটিও সে রকম কিছু ছিল না। পুলিশ ঘরে ঢুকতে দেয়নি। যেটুকু বুঝছি, পুরনো দলিল, প্যান কার্ড-আধার কার্ড আর কিছু ছবি খোয়া গিয়েছে।’’ তিনি জানান, বাস্তুজমি নিয়ে এক পরিচিতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কথা কাটাকাটি, মন কষাকষি চলছিল তাঁদের। মাসখানেক আগে ওই পরিচিত হঠাৎ করে তেজগঞ্জের বাড়িতে এঁচোড় নিতে এসেছিলেন। সন্দেহভাজনের তালিকায় ওই ব্যক্তি রয়েছেন, বলেও তাঁর দাবি। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ঘটনার অভিঘাতে মীরাদেবীর মানসিক স্থিতি ঠিক নেই। দু’দিন পরে তাঁর সঙ্গে কথা বলে ও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে আততায়ীর ছবি আঁকানো হবে।
এ দিন দুপুরে সিআইডি-র বিশেষজ্ঞ দল ঘরে ঢুকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। নিহত বৃদ্ধের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেও কী ঘটেছিল, জানেন তাঁরা। ওই বিশেষজ্ঞ দল পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘরের ভিতরে থাকা দু’টি আলমারিতে এক জনের আঙুলের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। আর ঘরের ভিতরে পায়ের আঙুলের ছাপ দু’রকম পাওয়া গিয়েছে। তা থেকেই বিশেষজ্ঞদের মনে সন্দেহ, তাহলে কি আততায়ী দু’জন ছিল?
নিহতের পুত্রবধূ রানু গঙ্গোপাধ্যায় দত্ত, জামাই দেবাশিস সিংহ এ দিন বলেন, “এক জন নিরীহ মানুষকে কী জন্য খুন করা হল বুঝতে পারছি না!’’ রানুদেবী জানান, ৮৪ বছরের শ্বশুর বাড়ির রান্না থেকে অন্যান্য সাংসারিক কাজ নিজেই করতেন। বেশির ভাগ সময়ে ঘরেই থাকতেন। মীরাদেবীও বলেন, “উনি এতটাই শক্ত ছিলেন যে, ছেলেমেয়ের বাড়িতে দু’-তিন মাস করে থাকলেও আমার চিন্তা হত না। অচেনা লোক হলে তো উনি গেট খুলে দিতেনই না।’’ যদিও ঘটনার দিন বিকেলে ওই বৃদ্ধ পাড়ার দোকানে বিস্কুট কিনতে গিয়েছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। ধন্দে পড়শিরাও। কয়েকজন পড়শির দাবি, “উনি খুব সজাগ ছিলেন। অচেনা কাউকে গেট খুলে দিতেন না। গেটের ভিতর থেকে কথা বলতেন। তিনি কী ভাবে অচেনা লোককে গেট খুলে দিলেন, বুঝতে পারছি না!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy