Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বাঘ-আতঙ্ক, তিরে ঘায়েল মেছো বিড়াল 

সপ্তাহ দু’য়েক আগে হুগলির কোন্নগরেও সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।

পড়ে রয়েছে মৃত মেছো বিড়ালটি। নিজস্ব চিত্র

পড়ে রয়েছে মৃত মেছো বিড়ালটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১০
Share: Save:

বাঘের আতঙ্ক মেছো বিড়ালকে (ফিশিং ক্যাট) ধারাল অস্ত্র গেঁথে, পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে কাটোয়ার গ্রামে। সেটিকে ঝুলিয়ে একাধিক ছবি, নিজস্বী তোলারও হিড়িক দেখা যায়। পরে বন দফতরের কর্মীদের আসার খবর পেয়ে, সেটিকে ফেলে পালান স্থানীয় লোকজনের একাংশ। কর্মীরা পৌঁছে মৃত প্রাণিটিকে উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বর্ধমানের রমনাবাগানে পাঠান।

বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের আধিকারিক সুকান্ত ওঝা বলেন, ‘‘ওই প্রাণীটি মেছো বিড়াল বা ফিশিং ক্যাট। চিতাবাঘ বা বাঘ কাটোয়া এলাকায় আসার কোনও প্রশ্নই নেই। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’

সপ্তাহ দু’য়েক আগে হুগলির কোন্নগরেও সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। পরে বন দফতরের কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পায়ের ছাপ দেখে সেটি একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘরোলের বলে জানান। আতঙ্ক বা গুজব যাতে না ছড়ায়, সে জন্য মাইকে প্রচারও করা হয়। প্রাণীটির যাতে ক্ষতি করা না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয় সকলকে। ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে’ও চলে প্রচার। কিন্তু তা যে যথেষ্ট নয় তা প্রমাণ করেছে এ দিনের ঘটনা।

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে কাটোয়া ১ ব্লকের চাণ্ডুলি ও আমডাঙা এলাকায় বাঘ ঢোকার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জড়ো হয়ে ব্রহ্মাণী নদীর তীরে কলাবাগান এলাকায় ঝোপের মধ্যে পায়ের ছাপ দেখতে পান। থাবার মতো ছাপ দেখে বাঘের গুজব ছড়ায়। অভিযোগ। তার মধ্যেই এলাকাবাসীর একাংশ ঝোপঝাড়ে খুঁজতে শুরু করেন প্রাণীটিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটিকে দেখতে পেয়ে ঝোপ থেকে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তিরও ছোড়া হয়।

এর পরেই ‘বাঘ মারা’র উৎসাহে শুরু হয় উল্লাস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রাণীটিকে গ্রামে ঘোরানো হয়। ছবিও তোলা হয় দেদার। ভিড় করেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারও। তার মধ্যেই খবর যায় বন দফতরে। চাণ্ডুলি গ্রামের বাসিন্দা সাবিত্রী দাস, স্বরূপ দাসেরা বলেন, ‘‘প্রথমে শুনেছিলাম, গ্রামে বাঘ ঢুকেছে। ভয় পেয়েছিলাম। পরে মৃত মেছো বিড়ালটিকে দেখে মন খারাপ হয়ে যায়।’’

বন দফতরের দাবি, ঝোপঝাড়, পুকুর আছে এমন এলাকায় মেছো বিড়াল দেখা যায়। তবে দিনে দিনে এ রাজ্য এদের সংখ্যা কমছে। গুজবের জেরে এ ধরনের প্রাণীকে মেরে ফেলাটা অমানবিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Fishing Cat Katwa Tiger
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy