বাসে ওঠার ভিড়। নিজস্ব চিত্র
রেলের তৃতীয় লাইন পাতার কাজ চলছে রসুলপুর থেকে দেবীপুর পর্যন্ত। তার জেরে ১৯ দিন ধরে বাতিল হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের প্রচুর লোকাল ট্রেন। যাত্রাপথ বদলেছে অনেক এক্সপ্রেসেরও। আর তাতেই ‘পৌষ মাস’ বাস ব্যবসায়ীদের। কর্মী ইউনিয়ন, বাস মালিক থেকে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের দাবি, বর্ধমান থেকে মেমারি, মশাগ্রাম, জৌগ্রাম যাওয়ার লোক মিলত না। এক রকম ফাঁকা বাস নিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে হত। এখন দাঁড়িয়ে যাওয়ার জায়গা পাচ্ছেন না যাত্রীরা।
তৃণমূল প্রভাবিত মেমারি বাস কর্মচারী সমিতির সম্পাদক বাবু হাজরার দাবি, “বর্ধমান মেন লাইনে আধ ঘন্টা অন্তর ট্রেন। মেমারি বাসস্ট্যান্ড থেকে ৮টি বাস কোনও রকমে যাতায়াত করছিল। এখন ট্রেন বন্ধ থাকায় বাস উপচে পড়ছে।’’
তবে ট্রেনের বদলে বাসে যাতায়াত করলেও হয়রানি কমেনি যাত্রীদের। বেশির ভাগ যাত্রীদেরই অভিযোগ, মেমারি, রসুলপুর থেকে ট্রেনের ভাড়ার চেয়ে তিন গুন বেশি ভাড়াদিতে হচ্ছে বাসে। তা ছাড়া বাসগুলি শহরের ভিতরেও ঢোকে না। উল্লাস মোড়ের বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরে যেতে গেলে টোটোয় আরও বেশি খরচ হচ্ছে। কলেজ পড়ুয়া শাশ্বতী রায়চৌধুরি, শঙ্খদীপ সাহাদের কথায়, “কলেজ ও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার জন্যে ট্রেনের নির্দিষ্ট সময়ে বেরিয়ে ঠিকঠাক পৌঁছে যেতাম এত দিন। এখন এক ঘন্টা আগে বেরিয়েও বাসের জন্যে হা পিত্যেশ করে বসে থাকতে হচ্ছে।’’ একই দাবি মেমারির ব্যবসায়ী মহম্মদ ইব্রাহিমের। তিনি বলেন, “তেঁতুলতলা বাজার থেকে মনোহারি দ্রব্য নিয়ে মেমারি পৌঁছতে অনেক বেশি সময় সাগছে। যে কাজ দু’ঘন্টায় মিটে যায়, সেটাই এখন সারাদিন লাগছে।’’
বাস মালিক সমিতি ও কর্মচারি সমিতি সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান-মেমারি মধ্যে ৮টি বাস ছাড়াও জিটি রোড দিয়ে দূরপাল্লার আরও ১৭টি বাস যাতায়াত করে। হুগলির পান্ডুয়া, বৈঁচি, মেমারি, রসুলপুরের যাত্রীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে সেগুলিতেও। বাস মালিক সমিতির জেলার কর্তা তুষার ঘোষ বলেন, “মেমারি রুটের বাসে প্রচন্ড চাপ। গত কয়েক দিনে ৬৫ শতাংশ লোক বেশি যাতায়াত করছে।’’
সোমবারই রসুলপুর থেকে চিকিৎসার জন্যে বর্ধমানে এসেছিলেন শেফালি কর্মকার। তিনি বলেন, “বাসে যাতায়াত করতে ডাক্তারের নিষেধ রয়েছে। ট্রেন চলছে না বলে বাধ্য হয়ে বাসে আসতে হল। তার পর উল্লাস মোড়ে আলিশা বাসস্ট্যান্ডে নেমে টোটো করে খোসবাগান পৌঁছলাম। হয়রানি-কষ্ট, খরচ, সবই বেড়েছে। কিন্তু উপায় কী!’’
দুপুরের দিকে ট্রেন বাতিল থাকায় সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীদের একাংশ। পাণ্ডুয়া থেকে বিভিন্ন দোকানে চিকিৎসা-যন্ত্র সরবরাহ করেন সুপ্রতিম স্বর্ণকার। তিনি বলেন, “ট্রেনে করেই এক স্টেশন থেকে আর এক স্টেশনে নেমে বরাত দেওয়া যন্ত্র সরবরাহ করি। তারপর বর্ধমান থেকে সোজা কলকাতায় ফিরে যাই। ট্রেনের সমস্যার জন্যে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি মেমারির মতো জায়গায় পৌঁছে দিতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy