Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

চলবে না লোকাল ট্রেন, বিকল্পের খোঁজে যাত্রীরা

আয়ে টান পড়ার চিন্তায় ভুগছেন নানা পেশার মানুষজন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই অনেকে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে শুরু করেছেন বলে জানান।

বুধবার বিকেলে ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। কালনায়।

বুধবার বিকেলে ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরা। কালনায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কালনা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২১ ০৬:২২
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে লোকাল ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে, যাতায়াতে দুর্ভোগের আশঙ্কায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। আয়ে টান পড়ার চিন্তায় ভুগছেন নানা পেশার মানুষজন। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই অনেকে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে শুরু করেছেন বলে জানান।

বর্ধমানের গোলাপবাগ মোড়ের বাসিন্দা প্রসূন চন্দ্র দুর্গাপুরের একটি কলেজের কর্মী। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে লোকাল ট্রেনে তিনি দুর্গাপুর যান ও সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘হয়তো এ বার দুর্গাপুরে থাকার বন্দোবস্ত করেই কাজ করতে হবে।’’ বর্ধমানের বাসিন্দা শ্রীমন্ত মুখোপাধ্যায় হুগলির শ্রীরামপুরের একটি হাসপাতালের কর্মী। তিনিও ট্রেনে যাতায়াত করেন। তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতিতে হয় মোটরবাইকে অথবা গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করতে হবে। কলকাতার বেসরকারি সংস্থার কর্মী, বর্ধমানের অরবিন্দপল্লি এলাকার বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ প্রতিদিন সকালে ট্রেন ধরেন। তিনিও এ দিন বলেন, ‘‘কয়েকজন মিলে গাড়ি ভাড়া করে অফিসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

কাটোয়ার বাসিন্দা, ওষুধ ব্যবসায়ী অভিজিৎ সরকার প্রায়ই কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখার ট্রেন ধরে নবদ্বীপে কাজে যান। তিনি বলেন, ‘‘বছরখানেক বন্ধ থাকার পরে, ট্রেন চালু হয়েছিল। আবার ট্রেন বন্ধ হচ্ছে। আমরা খুবই সমস্যায় পড়লাম। রুজি-রোজগার কী হবে জানি না।’’ কাটোয়ার চিকিৎসক অসীম হাজরার চেম্বার রয়েছে মুর্শিদাবাদের সালারে। কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার ট্রেনে সেখানে যাতায়াত করেন তিনি। এ দিন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের কথা শোনার পরে তাঁর দাবি, ‘‘ট্রেন বন্ধ মানে বহু মানুষের রোজগার বন্ধ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াচ্ছে, যেন হয় করোনায়, অথবা অনাহারে প্রাণ যাবে মানুষের।’’

এ দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে কালনা স্টেশনে দাঁড়িয়ে বিমা সংস্থার কর্মী কৌশিক বিশ্বাস বলেন, ‘‘বারাসত থেকে যাতায়াত করি। লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়ে গেলে বেশ মুশকিল। বাধ্য হয়ে গাড়ি ভাড়া করে আসতে হবে।’’ কালনার একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিকের কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কের অনেক কর্মী দূর-দূরান্ত থেকে আসেন। এখন গাড়ি ভাড়া করে আসতে যেমন তাঁদের প্রচুর টাকা খরচ করতে হবে, তেমনই অনেক সময়ও লাগবে।

‘হাওড়া-কাটোয়া সাবার্বান প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্যের কার্যকরী সভাপতি দেবাশিস বসুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা নিয়্ন্ত্রণে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সমর্থন করছি। তবে যে সব সরকারি কর্মী ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁরাও সমস্যায় পড়বেন। তাঁদের কথা ভেবে দু’-একটি বিশেষ ট্রেন চালানোর আর্জি জানাচ্ছি।’’

ট্রেন বন্ধের ঘোষণায় মাথায় হাত হকারদের। এ দিন কালনা স্টেশনে হরেন অধিকারী নামে এক হকার বলেন, ‘‘সংসার চালাতে আবার কোনও কাজ খুঁজতে হবে।’’ বর্ধমান স্টেশন চত্বরে টোটো চালকেরাও হতাশা প্রকাশ করেন। নানা স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানান, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের কথা তাঁরাও শুনেছেন। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত রেলের তরফে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। যেমন নির্দেশ আসবে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy