বিতর্ক এখানেই। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় হাইস্কুল নেই। সে জন্য এলাকাবাসীর টাকায় তৈরি হয়েছিল চার কক্ষের একটি ভবন। কিন্তু নানা জটিলতায় সেখানে স্কুল চালু হয়নি। এখন সেখানে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় চলছে, অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রানিগঞ্জের নূপুর উপরপাড়া এলাকার ঘটনা। ওই ভবনে হাইস্কুল চালু করার দাবিতে গণসই সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে সিপিএম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৭-তে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, প্রাক্তন বিধায়ক তথা নূপুরের বাসিন্দা হারাধন রায় নূপুর উপরপাড়ায় হাইস্কুল তৈরির জন্য এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের তোড়জোড় করেন। এলাকাবাসীর পাশাপাশি, বল্লভপুর পেপার মিলের শ্রমিকেরা এক দিনের মজুরি চাঁদা হিসেবে দিয়েছিলেন। তার পরে তৈরি হয় ভবনটি। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ওই ভবনে প্রাথমিক ভাবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র হাইস্কুল চালুর তোড়জোড় করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, সে স্কুল মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হবে। কিন্তু সে সময় শিক্ষা দফতরের অনুমোদন না মেলায় স্কুল চালু হয়নি।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে ভবনটি নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। সিপিএম নেতা মলয়কান্তি মণ্ডলের অভিযোগ, ২০২০-তে ওই ভবনের সামনে খুঁটি পুঁতে তৃণমূল দলীয় পতাকা টাঙিয়ে দেয়। মলয়ের দাবি, “আমরা এর প্রতিবাদে গণসই সংগ্রহ করে ব্লক অফিসে জমা দিই। তার পরে পতাকা খুলে নেওয়া হয়।” মলয়-সহ সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, “২০২২-এ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল ভবনটিকে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এখন সেটি পুরোপুরি শাসক দলের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে সিপিএম ফের ওই ভবনে হাইস্কুল চালুর দাবিতে গণসই সংগ্রহ করছে।
এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ বাউড়ি, মোহিতোষ রায়েরা জানান, নূপুর ও বেলুনিয়া পাশাপাশি গ্রাম। এই এলাকার পড়ুয়াদের পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়াশোনার জন্য তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয়। তাতে স্কুলছুটও হয় অনেকে। বেলুনিয়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত দাস ও নূপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ দলুইদেরও দাবি, “ওই ভবনটিতে হাইস্কুল চালু হলে এলাকার পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। এই এলাকা হয়ে দুর্গাপুরের বেনাচিতি থেকে রানিগঞ্জে একটি মাত্র মিনিবাস যাতায়াত করে। সারা দিনে তিন বার করে করে আসে-যায় বাসটি। এতে পড়ুয়ারা খুবই সমস্যায় পড়ে। অনেকে টোটো, সাইকেলে চড়ে অথবা হেঁটে স্কুলে যেতে বাধ্য হয়।”
স্কুলের জন্য তৈরি ভবনে দলীয় কার্যালয়, এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক রুনু দত্তের প্রতিক্রিয়া, “তৃণমূলের সংস্কৃতিটাই হল লুটের। এখন স্কুলের জন্য তৈরি ভবনও লুট করছে।” বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিলীপ দে’র বক্তব্য, “তৃণমূল যে শিক্ষার বিরোধী, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।” যদিও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের আসানসোল দক্ষিণ গ্রামীণ ব্লকের সভাপতি দেবনারায়ণ দাস। তাঁর কথায়, “দলের নাম করে কেউ ব্যক্তি স্বার্থে ভবনটি ব্যবহার করে থাকতে পারেন। এর সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। রাজ্য সরকার ভবনটিতে স্কুল চালুর তোড়জোড় করলে, আমরা সব রকম ভাবে পাশে আছি।” তবে ব্যক্তি স্বার্থে কারা ভবনটি ব্যবহার করে ‘থাকতে পারেন’, তা অবশ্য ভাঙেননি দেবনারায়ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy