Advertisement
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Mid-Day Meal

বাজার চড়া, খুদেদের জন্য শুধু ভাত-ডিম

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়িয়েছে। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য ‘পরিপূরক পুষ্টিকর খাবারের’ কোনও বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা জানান, জ্বালানির সঙ্গেই মশলা, তেল, আদা-রসুনের দাম ধরা থাকে।

মেমারির এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে।

মেমারির এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:১২
Share: Save:

টিফিন কৌটো হাতে দাঁড়িয়ে কচিকাঁচারা। পর পর সেই কৌটোয় ভাত ও অর্ধেক ডিম ভরে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন রাঁধুনি বা সহায়িকা। কৌটো হাতে বাড়ির পথ ধরছে খুদে।

পূর্ব বর্ধমানে বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গত কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে এই দৃশ্য। সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) নিয়ম অনুযায়ী, ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সের শিশুরা অঙ্গনওয়াড়ি থেকে পুষ্টিকর খাবার পাবে। তার মধ্যে ৩-৬ বছর বয়সিদের কেন্দ্রে বসেই খেতে হবে। তা হলে ওই শিশুরা খাবার বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কেন? অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরা জানাচ্ছেন, ডিমের দাম বেড়েছে।আলু-সহ আনাজের দামও চড়া। বরাদ্দ যা মেলে, তাতে ভাত ও ডিমের বেশি কিছু বন্দোবস্ত করা যাচ্ছে না। কিন্তু শুধু ভাত-ডিম খেতে অসুবিধায় পড়ে খুদেরা। তাই এই খাবার নিয়ে যেতে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা, যাতে তারা বাড়ির রান্না তরকারি দিয়ে খেতে পারে।অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরা জানান, সোম, বুধ ও শুক্রবার শিশু পিছু খাবারের বরাদ্দ ৮ টাকা ৫৯ পয়সা। এই দিনগুলিতে ভাতের সঙ্গে গোটা ডিমের ঝোল দেওয়ার কথা। ডিমের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ৬ টাকা। কিন্তু এখন খোলা বাজারে ডিমের দাম প্রায় ৮ টাকা। ফলে, ভাত ও ডিম দিতেই বরাদ্দ শেষ। মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার শিশুদের জন্য বরাদ্দ ৮ টাকা করে। এই দিনগুলিতে অর্ধেক ডিম এবং আনাজ-সহ খিচুড়ি দেওয়ার কথা। কিন্তু চাল, ডাল ও অর্ধেক ডিমেই বরাদ্দ প্রায় খরচ হয়ে যাচ্ছে, দাবি তাঁদের। মেমারির কয়েক জন অভিভাবক বলেন, “শুধু ডিম আর ভাত খেতে গেলে তো বাচ্চার গলায় আটকে যাবে। বাড়িতে তা নিয়ে চলে এলে, কিছু তরকারি দিয়ে খাওয়ানো যাচ্ছে।”

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়িয়েছে। কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য ‘পরিপূরক পুষ্টিকর খাবারের’ কোনও বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা জানান, জ্বালানির সঙ্গেই মশলা, তেল, আদা-রসুনের দাম ধরা থাকে। সে জন্য ২৩ টাকা মেলে। তাঁদের দাবি, জ্বালানির খরচ শেষ কবে বেড়েছে, কারও খেয়াল নেই। ওই টাকায় এখন জ্বালানি জোগাড় করা খুবই মুশকিল।

‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতি’র নেত্রী তানিয়া বেগমের অভিযোগ, “টাকা নেই, কর্মী নেই। কী ভাবে একটি শিশুকে কেন্দ্রে বসিয়ে খাওয়ানো সম্ভব? অভিভাবকেরাও বাচ্চাকে অপরিচ্ছন্ন জায়গায় বসে খাওয়াতে চান না। তাই অনেকেই কৌটোয় খাবার নিয়ে চলে যাচ্ছেন।” ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়ন’-এর রাজ্য সম্পাদক মাধবী পণ্ডিতের প্রশ্ন, “শুধু ডিম দিলে কোনও অভিভাবক বাচ্চাকে কেন্দ্রে বসে খেতে দেবেন কেন?” আইসিডিএস কর্তাদের দাবি, বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রকে বেশ কয়েক বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র বরাদ্দ না বাড়ালে, রাজ্য তা বাড়াতে পারবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

market price Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy