মাইথনে পর্যটকদের দল। ছবি: পাপন চৌধুরী।
দূরে হোক বা কাছাকাছি, শীত পড়লেই ভ্রমণের নেশায় বুঁদ বাঙালি পাড়ি জমায় পর্যটনস্থলে। তবে এ বার বাদ সেধেছে করোনা অতিমারি। তাই এখনও দূরের পর্যটনস্থলে সে ভাবে বেড়াতে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না অনেকেই। ভিড় বাড়ছে কাছের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। তবে কাছের সব পর্যটনস্থলেই যে ভিড় হচ্ছে। এমনটা নয়, জানালেন মাইথনের বেসরকারি হোটেল ব্যবসায়ীরা।
প্রতি বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে মার্চের গোড়া পর্যন্ত মাইথনে পর্যটকদের ভিড় থাকে। হোটেল মালিকেরা জানালেন, প্রতি বছর রাজ্যের নানা প্রান্তের স্কুল-কলেজের দলগুলি শিক্ষামূলক ভ্রমণে মাইথনে আসে। এ বার দেখা মেলেনি। পুজোর মরসুমেও একেবারে খাঁ খাঁ করেছে মাইথন। এলাকায় প্রায় ২২টি হোটেল রয়েছে। সাধারণত পুজোর মাস থেকে মার্চের গোড়া পর্যন্ত এক একটি হোটেলে গড়ে ২৫ লক্ষ টাকা আয় হয় বলে জানালেন মালিকেরা। কিন্তু এ বার হোটেলের খরচ তুলতেই হিমসিম অবস্থা তাঁদের।
‘মাইথন হোটেল অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মনোজ তিওয়ারি বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ মেনে স্বাস্থ্যবিধির যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে। আশা করি, বড়দিনের উৎসব থেকে ছন্দে ফিরবে মাইথন।’’ তাঁর দাবি, হাতেগোনা কয়েকজন পর্যটক হোটেলের ঘর ভাড়া নিচ্ছেন। সেদিক থেকে অবশ্য সরকারি পর্যটক আবাসের অবস্থা অনেকটাই ভাল বলে দাবি মাইথন পর্যটক আবাসের আধিকারিক নজরুল ইসলামের। তিনি বলেন, ‘‘আনলক পর্ব শুরু হতে প্রতিদিনই সব ঘর ভর্তি।’’
শীতে পড়লেই মাইথনে পিকনিক পার্টির ভিড় জমতে শুরু করে। বিশেষ করে বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ ছাড়াও শনি ও রবিবার বহু পর্যটক এখানে আসেন। ফলে, কোনও ভাবেই যেন সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্য-বিধি লঙ্ঘিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি বলেন, ‘‘সালানপুর ব্লক প্রশাসন নজরদারি চালাবে।’’
কী-কী নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে? জেলাশাসক জানিয়েছেন, পিকনিক করতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলা যাবে না। অবশ্যই প্রত্যেককে মাস্ক পরতে হবে। বেশি জটলা করা যাবে না। একই সঙ্গে বেসরকারি হোটেল মালিকদের জন্যও বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এগুলি হল, পর্যটকদের থার্মাল স্ক্রিনিং করানো বাধ্যতামূলক। কোনও ভাবেই কোভিড সুরক্ষা-বিধি লঙ্ঘন করা যাবে না। লজ বা হোটেলের প্রত্যেকটি ঘরে নিয়মিত জীবাণুনাশ করতে হবে। রাখতে হবে বিশেষ সুরক্ষা কিট।
মাইথনের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ডিভিসি এলাকা। সেখানেও মানুষজন পিকনিক করেন। উৎসবের মরশুমে ডিভিসি কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ আধিকারিক অপূর্ব সাহা। তিনি জানিয়েছেন, ভিড়ের সময় জলাধারের নিরাপত্তার জন্য ডিভিসির আধিকারিক, পুলিশ ও ভিআইপিদের গাড়ি ছাড়া, অন্য কোনও গাড়ি জলাধারের উপর দিয়ে যাতায়াত করবে না। এ জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের দিকে দু’টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, পিকনিকের দলগুলিকে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy