Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

স্পষ্ট নির্দেশ নেই, প্রশ্নে পঞ্চমে ভর্তি

এখনও পর্যন্ত একটি স্কুলেও পঞ্চম শ্রেণিতে এক জন পড়ুয়াও ভর্তি হয়নি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৯
Share: Save:

রাত পেরোলেই নতুন বছর। তার সঙ্গেই শুরু হতে চলেছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। এ বছর থেকে পূর্ব বর্ধমানে ৯৬৭টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পঠন-পাঠন শুরু হওয়ার কথা। বিভিন্ন স্কুলে সরকারি বইও পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি স্কুলেও পঞ্চম শ্রেণিতে এক জন পড়ুয়াও ভর্তি হয়নি। কেন?

শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন, প্রধান শিক্ষকদের বড় অংশের দাবি, ভর্তি করার নির্দেশিকা দিয়েই সরকারের দায়িত্ব শেষ। কিন্তু কী ভাবে ভর্তি করাতে হবে, চতুর্থ শ্রেণির মতোই পড়ানো হবে না মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে বিষয়গত ভাবে পড়ানো হবে, কতগুলি পিরিয়ড নেওয়া যাবে—এ রকম কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। ফলে ভর্তির নির্দেশ পেয়েই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেননি প্রধান শিক্ষকেরা।

তাঁদের দাবি, চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের ধরে রেখে পঞ্চম শ্রেণিতেই ভর্তির ব্যবস্থা করতে বলেছিল জেলা শিক্ষা দফতর। কিন্তু নির্দেশ আসার আগেই অর্ধেকের বেশি অভিভাবক ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ নিয়ে অন্য স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তির ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি রেজিস্টারও দেওয়া হয়নি, যেখানে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্ত করা হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য সরকারি বই দেওয়া হলেও কোন বই বাইরে থেকে কিনতে হবে তার তালিকা ঠিক করা হয়নি। শিক্ষক সংগঠনগুলিরও দাবি, শিক্ষা দফতরের কাছে নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পাওয়া যায়নি।

এই জেলায় ৯৬৭টি স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে শিক্ষক-মহলে নানা প্রশ্ন ছিল। সংবাদপত্রে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই জেলা শিক্ষা দফতর নড়েচড়ে বসে। বিভিন্ন চক্রের স্কুল পরিদর্শকদের কাছে নির্দেশ যায়, পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য কোন কোন স্কুল পঞ্চম শ্রেণি শুরু করতে পারবে না, তার তালিকা তৈরি করার। নতুন স্কুলের নাম দেওয়ার জন্যও বলা হয়। আপাতত ৫৮টি স্কুলের নাম বাদ গিয়েছে তালিকা থেকে। সম পরিমাণ স্কুলের নাম পঞ্চম শ্রেণির অনুমোদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা কমিশনারের কাছে পাঠানো হলেও তার চিঠি আসেনি। ফলে, ওই সব স্কুলেও ভর্তি নিয়ে সমস্যা রয়েছে।

জেলা বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মালিক বলেন, “কোনও রকম নির্দেশিকা পাওয়া যায়নি বলে অনেক স্কুল পঞ্চম শ্রেণির জন্য বই তোলেনি। শিক্ষকেরা কী ভাবে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াবেন, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।’’ বিজেপির প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাধাকান্ত রায়ের দাবি, “পুরো ব্যাপারটাই নিধিরাম সর্দারের মতো। কোনও কিছুই স্পষ্ট নয়। প্রহসনের জায়গায় চলে যাচ্ছে।’’ তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি তপন পোড়েল বলেন, “আমরা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলছি।’’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের (ডিপিএসসি) সচিব তথা স্কুল পরিদর্শক (ডি আই) নারায়ণচন্দ্র পাল বলেন, “চতুর্থ শ্রেণির পড়ু্য়াদের সংশ্লিষ্ট স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করতে হবে, এই নির্দেশিকার বাইরে আর কিছু আসেনি।’’ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তীর দাবি, “নির্দেশিকা তৈরি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy