নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনে ভোট দিতে যান অনেকেই। কিন্তু ভোটদানের নিয়ম-কানুন বা বুথ সম্পর্কে আগাম কোনও ধারণা থাকে না তাঁদের বেশিরভাগের। ভোটারদের সচেতন করা ও বুথের উপরে সরাসরি নজরদারির জন্য এ বার বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তৈরি হয়েছে ‘ইএলসি মিত্র’ নামে একটি অ্যাপ, যার মাধ্যমে বুথে কী কী কাজ হয়েছে তা ভোটারেরা জানতে পারবেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই অ্যাপের মাধ্যমে ‘ইলেক্টোরাল লিটারেসি ক্লাব’ (ইএলসি)-এর সদস্যেরা কী কাজ করছেন, তার ছবি-ভিডিও ‘আপলোড’ করা যাবে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনও জানতে পারবে, পূর্ব বর্ধমানের কোন বুথে কী কাজ হচ্ছে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছে ছবি-তথ্য চেয়ে থাকে। এই অ্যাপের মাধ্যমে তারা সরাসরি ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।’’
ভোটের বিষয়ে পাঠ দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। বিভিন্ন মেলায় ভোটারদের সচেতন করার জন্য প্রচার হয়েছে। মহিলাদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে গ্রামে-গ্রামে প্রচারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এ বার স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে ‘ইএলসি ক্লাব’ তৈরি করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ভোটারদের সচেতন করার বার্তা দিচ্ছে প্রশাসন। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ ভোটারদের নিয়ে এখন থেকেই ‘নির্বাচনী পাঠশালা’ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
জেলা নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার মতে, “মানুষজনের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ কম। তা বাড়ানোর জন্যই স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে ‘ইএলসি ক্লাব’ তৈরি করা হয়েছে। তারাই ভোটারদের নানা নিয়মকানুন জানাতে সাহায্য করছে।’’ স্কুল পড়ুয়ারা ভবিষ্যতের ভোটার। তারা যাতে এখন থেকেই ভোটদানে উৎসাহী হয়, সে জন্য যেমন তাদের ইএলসি ক্লাবের সদস্য করা হয়েছে, তেমনই নির্বাচনী পাঠশালার পড়ুয়াও রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি ‘ইএলসি মিত্র’ অ্যাপে আপলোড করা হয়েছে। ইএলসি ক্লাবের সদস্যেরা কোথায় কী কাজ করেছে, তার ছবি এবং ভিডিয়ো নিয়মিত আপলোড করা হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় কলেজ স্তরে ৯৯টি এবং স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে ৮০টি ইএলসি গঠন করা হয়েছে। ৪৪৫৬টি বুথেই রয়েছে ইএলসি এবং নির্বাচনী পাঠশালা। এ বার লোকসভা ভোটে প্রতিটি বুথেই থাকবে ভিভিপ্যাট। সে সম্পর্কে ভোটারদের যেমন সচেতন করা হচ্ছে, তেমনই নতুন প্রযুক্তির ইভিএম সম্পর্কেও ধারণা দিচ্ছেন ক্লাবের সদস্যেরা। এ ছাড়া ‘নোটা’ নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই অ্যাপ চালুর সময়ে শুধুমাত্র নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক বা ক্লাবের সদস্যেরা ব্যবহার করতে পারতেন। এখন অবশ্য সব ভোটারই অ্যাপটি খুলতে পারছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “যে কোনও ভোটার তার বুথে কী কাজ হয়েছে, তা জানতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy