Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
দিনভর চেষ্টা চালিয়ে রাতে মিলল হদিস

খাদানে তিন যুবকের দেহ উদ্ধার করল এনডিআরএফ

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ডেপুটি কমান্ডান্ট অভয়কুমার সিংহের নেতৃত্বে ৩২ সদস্যের এনডিআরএফের দলটি আলডিহিতে পৌঁছয়। প্রথমেই দলের সদস্যেরা উপর থেকে এলাকার একটি প্রাথমিক নকশা তৈরি করেন।

কাটা হচ্ছে মাটি। বৃহস্পতিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

কাটা হচ্ছে মাটি। বৃহস্পতিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৭
Share: Save:

দু’দিন বন্ধ থাকার পরে কুলটির আলডিহির ‘অবৈধ’ খাদানে বৃহস্পতিবার ফের উদ্ধারকাজ শুরু করে নিখোঁজ যুবকদের দেহ মিলল রাতে। ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ ফোর্স’ (এনডিআরএফ)-এর একটি দল এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। সন্ধ্যা নামার পরে আলো জ্বালানোর বন্দোবস্ত করে কাজ চলে। শেষ রাত প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ ভূগর্ভ থেকে উদ্ধার হয় বিনয় মুর্মু (৩২), সন্তোষ মারান্ডি (২৫) ও কালীচরণ কিস্কুর (২২) দেহ।

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ডেপুটি কমান্ডান্ট অভয়কুমার সিংহের নেতৃত্বে ৩২ সদস্যের এনডিআরএফের দলটি আলডিহিতে পৌঁছয়। প্রথমেই দলের সদস্যেরা উপর থেকে এলাকার একটি প্রাথমিক নকশা তৈরি করেন। তার পরে দু’টি মাটি কাটার যন্ত্র নামিয়ে খাদান এলাকার জমি সমান করার কাজ শুরু হয়। খনিমুখকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৫ মিটার ব্যাস এলাকার মাটি কেটে সমতল করা হয়। ঘণ্টা তিনেক ধরে এই কাজ করার পরে কয়েকজন উদ্ধারকারীকে খাদানে নামানোর উদ্যোগ শুরু হয়। কিন্তু খনিমুখের বাতাস পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেখানে বিষাক্ত গ্যাস জমে রয়েছে।

ডেপুটি কমান্ড্যান্ট জানান, খাদানের মুখের কাছে প্রচুর হাইড্রোজেন সালফাইড মেলে। যন্ত্র নামিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, আর একটু গভীরে জমে রয়েছে কার্বন মনোক্সাইড। বিষাক্ত গ্যাস বার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় তা সম্পূর্ণ হয়। এর পরেই উদ্ধারকারী দলের দুই সদস্য দুর্গেশচন্দ্র যাদব ও পারাসিংহ টাটা রাও অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অন্য যন্ত্রপাতি নিয়ে খনিগর্ভে ঢোকেন। প্রায় কুড়ি মিনিট পরে সেখান থেকে তাঁরা উপরে উঠে আসেন। তাঁরা জানান, খনিমুখ থেকে দশ-বারো ফুট দূরে পরপর দু’টি বাঁক রয়েছে। সেখান থেকে আরও প্রায় ২০ ফুট দূরে তিনটি দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

এনডিআরএফ সূত্রে জানা যায়, ভূগর্ভে ঠিক কোথায় দেহগুলি রয়েছে, তা আন্দাজ করার পরে খনিমুখ থেকে আরও প্রায় ২০ ফুট মাটি কাটার কাজ শুরু হয়। বিকেল ৩টে নাগাদ এই কাজ শুরু হয়। পুরো অংশের জমি সমতল করার পরে ঘণ্টা দু’য়েক ধরে প্রায় ৪০ ফুটের একটি গর্ত খোঁড়া হয়। কিন্তু সেখানে সুড়ঙ্গ দেখা গেলেও কোনও দেহের হদিস মেলেনি বলে জানান উদ্ধারকারীরা।

এর মধ্যে অন্ধকার নেমে আসে। আলো জ্বালানোর বন্দোবস্ত করা হয়। উদ্ধারকারীরা অনুমান করেন, আরও কুড়ি ফুট দূরে দেহ রয়েছে। সেই অনুযায়ী ফের আর একটি গর্ত খোঁড়া শুরু হয়। রাত ৮টা নাগাদ সেই গর্ত খোঁড়া শেষ হলেও এ বার আর কোনও সুড়ঙ্গের দেখা মেলেনি বলে এনডিআরএফ সূত্রে জানা যায়। এর পরে গর্ত খোঁড়ার কাজ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বলেও উদ্ধরকারী দল সূত্রে জানা যায়।

এরই মধ্যে নতুন একটি সুড়ঙ্গপথ ধরে ভিতরে গিয়ে দেহ দেখা গিয়েছে বলে জানান এনডিআরএফের দুই সদস্য। কিন্তু উদ্ধারকারী দলের তরফে প্রথমে জানানো হয়, ওই পথ দিয়ে দেহ বার করা মুশকিল। সে জন্য আরও উন্নত যন্ত্র প্রয়োজন। রাত পৌনে ৯টা নাগাদ পুলিশকে ওই যন্ত্রের ব্যবস্থা করার কথা বলেন এনডিআরএফের কর্তারা। তবে এর পরেই রাত ৯টা নাগাদ এনডিআরএফের তিন সদস্য কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে সুড়ঙ্গ দিয়ে ভিতরে যান। খানিক পরে বার করে আনা হয় দেহ।

অন্য বিষয়গুলি:

NDRF Kulti Illegal Coal Pit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy