চলছে নাম লেখা। নিজস্ব চিত্র
ওয়ার্ড সভাপতি ঘোষণার পরেই রাতারাতি তৃণমূলের ওয়ার্ডের কার্যালয় বদলে গেল কাউন্সিলর অফিসে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে মেমারি শহরের একের পর এক জায়গায় ওয়ার্ড অফিসের নাম বদলে ‘কাউন্সিলর পরিষেবা অফিস’ লেখা শুরু হয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। মেমারি শহর তৃণমূলের সভাপতি স্বপন ঘোষালের অভিযোগ, ‘‘এখনও পর্যন্ত তিন-চারটে ওয়ার্ডের অফিসের নাম বদলে দিয়েছেন কাউন্সিলরেরা। তার মধ্যে পুরপ্রধানের ওয়ার্ডও রয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ওয়ার্ড অফিস থাকলে নতুন সভাপতিরা সেখানে যাবেন, কাজকর্ম দেখবেন। তৃণমূলের সুবিধাভোগীরা যে সব অন্যায় কাজ করেছে, তা ধরা পড়তে পারে। সেই আতঙ্কে ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিনের ওয়ার্ড অফিসকে কাউন্সিলর অফিসে বদলে ফেলা হয়েছে।’’ পুরপ্রধান অবশ্য সারা দিন ফোন ধরেননি, মেসেজেরও জবাব দেননি।
মেমারি পুরসভায় ১৬টি ওয়ার্ড। শহর সভাপতির অনুগামীদের দাবি, ১, ১২ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অফিস মুছতে দেখা গিয়েছে। দেওয়ালের গায়ে লেখা নামের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতীক, মুখ্যমন্ত্রীর ছবিও মুছে ফেলা হচ্ছে। ওই সব ওয়ার্ডের তৃণমূলের সভাপতিদের একাংশের দাবি, ‘‘পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরেরাই অনৈতিক কাজ করছেন।’’ ১২ নম্বরের ‘ওয়ার্ড অফিস’ মুছে ‘কাউন্সিলর পরিষেবা’ লেখার ফাঁকে এক অঙ্কন শিল্পীও বলেন বলেন, ‘‘পুরপ্রধানই ওয়ার্ড অফিস মুছে কাউন্সিলর কার্যালয় লিখতে বলেছেন।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দুই স্বপনের সম্পর্ক কোনও দিনই মধুর ছিল না। ২০১০ সালে মেমারিতে ১৬-০ ভোটে তৃণমূল জিতেছিল। তখন স্বপন বিষয়ীকে পুরপ্রধান করে দল। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বোর্ডে সরকারি ভাবে কোনও বিরোধী না থাকলেও স্বপন ঘোষাল বিরোধী ‘মুখ’ হয়ে ওঠেন। বিষয়ীর দাপটে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন ঘোষাল। পুরপ্রধানের সঙ্গে শহর সভাপতিও হয়ে যান স্বপন বিষয়ী। মধুসূদন ভট্টাচার্য বিধায়ক হওয়ার পরে মেমারি শহরের সভাপতি হন স্বপন ঘোষাল। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর অভিযোগ, শহর সভাপতির অফিস এখনও ছাড়েননি পুরপ্রধান। তার মধ্যেই ওয়ার্ড অফিসের নাম বদলে তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরেরা দখল নিতে শুরু করেছে। বিধায়ক বলেন, ‘‘বিস্তারিত রিপোর্ট দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।’’
এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাপস পাঁজার দাবি, ‘‘পুরোটাই অপপ্রচার। এক বছর আগে করা রং উঠে যাচ্ছে, তাই নতুন করে রং করা হচ্ছে।’’ আর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাশ্মীরা বেগমের দাবি, ‘‘আমি কাউন্সিলর হওয়ার পরে এলাকার মানুষের চাপে ওয়ার্ড অফিস লেখা মুছে কাউন্সিলর পরিষেবা কেন্দ্র লেখা হয়েছিল।’’
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের অন্দরে টাকা-পয়সার লড়াই। সে জন্যই এক পক্ষকে আটকাতে আর এক পক্ষ চেষ্টা করছে।’’ বিজেপি নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘দুই স্বপনের লড়াইয়ে পড়ে মেমারি শহরের হাঁসফাঁস অবস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy