Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

Asansol: ১০ মিনিটের জন্য ছাপ্পা ভোট তো হতেই পারে, বলছেন রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক

আসানসোলে এ বার তৃণমূলের আসন ৯১। বামফ্রন্টের দু’টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে তিনটি আসন, বিজেপি পেয়েছে সাতটি আসন এবং অন্যান্যরা পেয়েছে তিনটি আসন।

ছাপ্পার অভিযোগ মানলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

ছাপ্পার অভিযোগ মানলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:৪৭
Share: Save:

চার পুরনিগমের ভোটের ফল ঘোষণার পর শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ তুলে সরব বিরোধীরা। আরও এক ধাপ এগিয়ে সন্ত্রাসের অভিযোগে নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছে বাংলার বিজেপি। এই আবহে বিতর্কের আঁচ বাড়িয়ে দিলেন রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। বিধায়কের দাবি, ২০ মিনিটের জন্য ছাপ্পা ভোট হতেই পারে।
আসানসোলে পুরভোট চলাকালীন একাধিক জায়গা থেকে নানা অভিযোগ উঠেছিল। বহিরাগতদের ঢুকিয়ে গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম এবং বিজেপি। তা নিয়ে তাপসের ব্যাখ্যা, ‘‘একটা ভোট কেন্দ্রে অশান্তি হতে পারে। দু’একটা ফলস ভোট হতে পারে। অতীতেও হয়েছে। দু’এক জায়গায় সামান্য হলেও, কমবেশি হলে ১০ মিনিটের জন্য ছাপ্পা ভোট হতে পারে। আধ ঘণ্টা বা ১০ মিনিট যদি কোথাও অশান্তি হয় বা ছাপ্পা ভোট হয় তা হলে হিসাব করুন কত ভোট পড়তে পারে? এক ঘণ্টা ছাপ্পা হলে কটা ভোট পড়তে পারে? গড়ে ৫০-৬০টির বেশি ভোট কখনই পড়বে না। আর যেখানে আমাদের প্রার্থীরা এত ব্যবধানে জিতেছেন সেখানে কী করে বলবেন যে ছাপ্পা মেরে জিতেছে?’’

পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার আসানসোল জেলা বিজেপি-র পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়। জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেন বিজেপি নেতারা। তাঁরা ‘ভোট লুঠ’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির কথায়, ‘‘বহু বুথে ছাপ্পা হয়েছে। প্রার্থীদের মাথা ফাটানো হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে, অপহরণ করা হয়েছে। আমরা এ নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছি। আমরা আসানসোলের ভোট বাতিলের দাবি জানিয়েছি। সাত দিনের মধ্যে আমরা আসানসোলের ভোট নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করব যাতে নির্বাচনের দিন বা তার আগে বিভিন্ন জায়গায় যে ঘটনা ঘটেছে— বহিরাগতরা বসেছিল, পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে, গুলি চালিয়েছে, বোমা ছুড়েছে সেই সব প্রমাণ থাকবে।’’ প্রয়োজনে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুঙ্কারও দিয়েছেন জিতেন।

আসানসোলে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিজেপি-র বিক্ষোভ।

আসানসোলে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিজেপি-র বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

বিজেপি-র এই পদক্ষেপ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিতর্কের আগুন উস্কে দিয়েছেন তাপস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি যতদূর জানি, নির্বাচন কমিশনারের সিদ্ধান্তের পর বা শংসাপত্র দেওয়ার পর মামলা মোকদ্দমা দীর্ঘ দিন চলতে পারে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার ফলাফল বেরিয়েছে বলে আমার জানা নেই। নির্বাচন কমিশনার বা কমিশনের কর্মীরা আইনের পক্ষে কাজ করেছেন। আইনটা বাঁচিয়ে করেছেন।’’

আসানসোলে এ বার তৃণমূলের আসন বেড়ে হয়েছে ৯১। বামফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র ২টি আসন। এ ছাড়া কংগ্রেস পেয়েছে ৩টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৭টি আসন এবং অন্যান্যরা পেয়েছে ৩টি আসন। এই উদাহরণ তুলে ধরেই তাপসের বক্তব্য, ‘‘আমি যত দূর জানি, ওদের তারকা প্রার্থী যাঁরা তাঁরা জিতেছেন। তা হলে তাঁরাও কি ওই ভাবে জিতেছেন? এটা বিপরীতধর্মী কথা। ওদের তত্ত্ব খুব একটা মান্যতা পাবে বলে আমার মনে হয় না। এটা ছেলেমানুষি হবে। আমি ৪-৫ বার সিপিএমের আমলে জিতেছি। কত রকম ভাবে আমাদের হেনস্থা হতে হয়েছে। খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দেখিয়ে হার মেনে নেওয়া উচিত। ওরা নিজেদের যেন অসম্মানিত না করে।’’

তাপসের এ হেন বক্তব্যে কিছুটা অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোলের নেতা ভি শিবদাসন দাসুর কথায়, ‘‘তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের এক জন প্রবীণ নেতা। উনি কী বলেছেন আমি জানি না। কিন্তু আমি এটা বলতে পারি, বিধানসভায়ও সাধারণ মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে এই জেলায়। তাই আমরা জয়লাভ করেছি। পুরসভা নির্বাচনেও সাধারণ মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন বলেই আমরা এতগুলি আসন পেয়েছি। বিজেপি যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy