ক্ষোভ: রোগীমৃত্যুর পরে নার্সিংহোমের সামনে জটলা। নিজস্ব চিত্র
দুপুরে কাটোয়া নার্সিংহোমে সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তরুণী। সন্ধ্যা থেকে ফের শুরু হয় রক্তপাত, খিঁচুনি। অভিযোগ, বারবার খবর পাঠানোর পরেও চিকিৎসক আসেননি। শেষে রাত ৮টা নাগাদ ফের অস্ত্রোপচার হয়। রাত ১২টা নাগাদ নদিয়ার কালীগঞ্জের ওই তরুণীকে রেফার করা হয় বর্ধমান মেডিক্যালে। সেখানেই মারা যান তিনি। সকালে নার্সিংহোমের সামনে তরুণী কবিতা সরকারের (২২) দেহ ফেলে রেখে চলে বিক্ষোভ। রোগীর পরিজনেদের দাবি, ওই চিকিৎসক আগে রেফার করে দিলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত মেয়েটা। ওই চিকিৎসক বা নার্সিংহোমের তরফে অবশ্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানা হয়নি।
কবিতাদেবীর স্বামী, পেশায় ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সরকার জানান, সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ প্রসব বেদনা নিয়ে কাটোয়ায় ভর্তি করানো হয় স্ত্রীকে। দুপুর ২টো নাগাদ ওই হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করে ছেলের জন্ম দেন স্ত্রী। তারপরে কয়েক ঘণ্টা ঠিক থাকলেও সন্ধ্যা থেকে হাত-পা জ্বালা, রক্তপাত শুরু হয়। রোগী পরিবারের দাবি, বারবার ওই চিকিৎসককে ফোন করেন তাঁরা। কিন্তু উত্তর মেলেনি। নার্সিংহোমের তরফেও ফোন করা হয় ওই ডাক্তারকে। কবিতাদেবীর মামি অনিতা পোদ্দারের দাবি, ততক্ষণে খিঁচুনি শুরু হয়ে যায় ওই বধূর। শেষে রাত ৮টা নাগাদ চিকিৎসক আসেন। সঙ্গেসঙ্গেই অস্ত্রোপচার করার কথা জানান তিনি। ন’টা নাগাদ জানানো হয়, দু’বোতল রক্ত লাগবে। বিশ্বজিৎবাবুরা তা জোগাড় করে আনলে ফের দু’বোতল রক্ত আনার কথা বলা হয়। ওই প্রসূতির পরিবারের দাবি, ১০টা নাগাদ অস্ত্রোপচার শেষে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় ওই প্রসূতিকে।
কবিতাদেবীর শাশুড়ি মিনতিদেবী বলেন, ‘‘আমরা ১২টার পরে বর্ধমানে পৌঁছই। বৌমার অবস্থা দেখে সঙ্গেসঙ্গেই ভর্তি করিয়ে নেন ওরা। রক্তও আনতে বলেন। কিন্তু রক্ত টানার আগেই মেয়েটা শেষ হয়ে যায়।’’ রাতেই দেহ নিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে কবিতাদেবীর দেহ নার্সিংহোমের সামনে রেখে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজন। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ এসে কথা বলার পরে বিক্ষোভ ওঠে। তবে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি ওই পরিবার।
ওই চিকিৎসকের অবশ্য দাবি, ‘‘উনি সুস্থই ছিলেন। আচমকা শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এরকম রোগী লাখে একটা পাওয়া যায়। ওঁকে চার বোতল রক্ত দিয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় এনে বর্ধমানে পাঠানো হয়।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১২টা ৫০ নাগাদ ভর্তি হন ওই রোগী। এক ঘণ্টা ভর্তি ছিলেন। ভেন্টিলেশন, রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু আর কিছু করার ছিল না। কাটোয়া নার্সিংহোমের তরফে উত্তম মখোপাধ্যায়ও জানান, তাঁদের নার্সিংহোমে মৃত্যু হয়নি। ফলে কী হয়েছে বলতে পারবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy