বাড়ি তৈরির টাকা মেলেনি, এ ভাবই বসবাস কালনায়। নিজস্ব চিত্র javedarafin@gmail.com
পুরনো বাড়ি ভেঙে কেউ পলিথিনের নীচে রাত কাটাচ্ছেন। কেউ বাড়ি, লাগোয়া দোকান ভেঙে আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। কারও আবার বর্ষায় দিন কাটছে রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে। ‘সবার জন্য বাড়ি (হাউসিং ফর অল)’ প্রকল্পে টাকা না মেলায় কালনা শহরের বহু বাসিন্দারই এই হাল। ক্ষুব্ধ মানুষজন আঙুল তুলেছেন তৃণমূল পরিচালিত কালনা পুরসভার দিকে। উপপুরপ্রধান তপন পোড়েলের দাবি, ৩১ মার্চের মধ্যে যাঁদের বাড়ির ভিত খোঁড়া হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন। বাকিদের দ্রুত টাকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
কালনা পুরসভা এলাকায় প্রায় ১৪০০ পরিবার পাকা বাড়ি পাবে। নিয়ম অনুযায়ী, যে সব গরিব পরিবারের পাকা ছাদ নেই তাঁদের এই প্রকল্পে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যার মধ্যে উপভোক্তা দেবেন ২৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা মিলবে কেন্দ্র এবং রাজ্যের তহবিল থেকে। প্রকল্পের তালিকাভুক্তদের দাবি, মাস চারেক আগে একটি সভা করে পুরসভা ঘর ভেঙে ভিত তৈরির কাজ শুরু করতে বলে। ধাপে ধাপে বাড়ি তৈরির টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়। মাস তিনেকের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্ষা এসে গেলেও প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা পাননি বেশির ভাগ উপভোক্তারা।
শহরের লক্ষণপাড়ায় আদুরি রায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কাটা ভিতের খালে থইথই করছে জল। তার মধ্যে পলিথিনের ছাউনি টাঙিয়ে পরিবারের পাঁচ জনকে নিয়ে মাথা গুঁজেছেন বৃদ্ধা আদুরি। তিনি বলেন, ‘‘দরমার ঘরে দিন কাটাচ্ছিলাম। সেটাই ভাল ছিলাম। মাস তিনেক আগে বাড়ি তৈরির ভিত কেটে ফেলেছি। কিছুটা বৃষ্টি হলেই ভিতের খালে জল জমে যাচ্ছে। বাড়ির পাশের পুকুরের জল উপচে আসছে ঘরে।’’ নীলিমা বিশ্বাস নামে আর এক বাসিন্দাও বলেন, ‘‘পুরনো বাড়ি ভেঙে ভিত কেটে বসে রয়েছি। বাড়ি না থাকায় ছেলে বিনয়কে পথে পথে রাত কাটাতে হচ্ছে।’’ টাকা অ্যাকাউণ্টে ঢোকার পরে ভিত কাটার কথা বললে এত দুর্ভোগ হত না, দাবি তাঁর। বাড়ি লাগোয়া একটি ছোট্ট মুদিখানার দোকান ছিল সঞ্জয় মজুমদারের। দোকান এবং বাড়ি ভেঙে ফেলতে হয়েছে তাঁকে। সঞ্জয়ের আক্ষেপ, ‘‘পাকা বাড়ি তৈরির কাজে গতি নেই। বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’’ ভাড়া বাড়িতেও থাকছেন অনেকে।
প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের দাবি, ‘‘পুরসভার আগের বোর্ড আগে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিল। তার পরে শুরু হয়েছিল কাজ। এ বার তা করা হয়নি। যার ফলে বহু মানুষ সমস্যায় পড়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy