রেডিয়ো সারাচ্ছেন নিমাই চন্দ্র মোদক। —নিজস্ব চিত্র।
আর মাত্র কয়েকঘণ্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই মহালয়া। আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের জলদগম্ভীর কণ্ঠে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠান ছাড়া যেন মহালয়া অসম্পূর্ণ। তাই দেবীপক্ষের সূচনাকালে ঘুম ভেঙেছে মানুষেরও। পাড়ায় পাড়ায় লেগেছে পুরনো রেডিও সারানোর হিড়িক।
রেডিয়ো শোনার চল কমেছে অনেক কালই। তবুও মহালয়ার ভোরে মোবাইলে কিংবা টেলিভিশনে নয়, বরং রেডিয়োতে আকাশবাণীর ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠান শুনতে আজও মুখিয়ে থাকে বাঙালি। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠ পঙ্কজকুমার মল্লিক এবং বাণীকুমারের বিষয়ভাবনা- সব মিলিয়ে অনবদ্য এই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠান বছরের পর বছর ধরে আঁকড়ে রেখেছে বাংলার মন।
তবে আগের মতো কি আর টান আছে?
আছে। তাই তো প্রতি বছর ঠিক মহালয়ার আগেই কাজের চাপ বাড়ে নিমাইচন্দ্র মোদকের! নিমাই বর্ধমান শহরের প্রবীণ রেডিয়ো মেকানিক। বর্ধমানের কার্জন গেটের পাশে বৈদ্যনাথ কাটরায় তাঁর ছোট্ট দোকান। তিনিই জানালেন, এ বছর যেন হঠাৎ করেই রেডিয়ো শোনার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই অনেক রেডিয়ো আসছে মেরামতের জন্য। কুলুঙ্গিতে অযত্নে রাখা রেডিয়ো ধুলো ঝেড়ে হাজির হচ্ছে দোকানে।
নিমাই বলে চলেন, ‘‘এখন যতই ফোন বা টিভিতে দেখা যাক না কেন, রেডিয়োতে মহালয়া শোনার মজাই আলাদা। আগে তো এসব ছিল না। তখন রেডিয়োই ছিল ভরসা।’’ কৈশোর থেকেই এ পেশায় রয়েছেন নিমাই। দোকানে কাজ করে কাজ শিখেছেন। পরে প্রথাগত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, কাজ করেছেন কোম্পানিতেও। এ বছর এত কাজ পেয়েছেন যে, একা সবটা সামলে উঠতেই পারেননি নিমাই৷ বাইরে থেকে লোক লাগিয়ে কাজ করিয়ে আনাতে হয়েছে। তবু নিমাইয়ের আক্ষেপ, আগের মতো রেডিও শুনে সুখ নেই শহরে। বড্ড কোলাহল চারিদিকে। ভালভ কিংবা ট্রানজিস্টর রেডিয়োর সেই শ্রবণসুখও আর নেই। তবে গ্রামের দিকে এখনও তুলনামূলক ভাবে বেশি সংখ্যক মানুষ রেডিয়ো শোনেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy