কাটোয়ায় শ্রমিকদের জন্য আনা উদ্বৃত্ত খাবার নিয়ে যাচ্ছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র
দিন তিনেক আগে ২১টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন আসার কথা ছিল কাটোয়ায়। প্রায় সাত হাজার শ্রমিক ট্রেন থেকে নামবেন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন ও পুরসভা। কিন্তু দেখা যায়, ছ’টি ট্রেনে ৬৩৭ জন পরিযায়ী শ্রমিক এসে পৌঁছেছেন স্টেশনে। এর পরেই রেলের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তকর তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। পুরসভার দাবি, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জলে গিয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার ভোর থেকেই শ্রমিকেরা এসে পৌঁছবেন বলে জানানো হয়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পরে কাটোয়া স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড চত্বর বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। নিয়ন্ত্রণ করা হয় সাধারণ যান ও লোক চলাচল। পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একাধিক ‘মেডিক্যাল ক্যাম্প’ করা হয়। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও বাসনো হয়। আয়োজন করা হয় প্রায় সাত হাজার প্যাকেট টিফিনেরও। এ ছাড়া, দুই বর্ধমান তো বটেই, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার নানা গ্রামে শ্রমিকদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৩৫টি বাস রাখা হয়। কিন্তু সব আয়োজনই কার্যত ‘বৃথা’ যায়। রবিবার সকাল থেকে বাঁশের ব্যারিকেড খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের জন্য আনা হাজার হাজার টিফিনের প্যাকেট পুরসভার ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কিছু টিফিন নানা নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হলেও বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি পুরসভার।
কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেলের বিভ্রান্তিমূলক ঘোষণার জন্যই আমাদের ক্ষতি হল। কয়েক হাজার টিফিনের প্যাকেট নষ্ট হয়। মেডিক্যাল, জল, আলো, কুলার, বাসভাড়া, ডেকরেটার্স-সহ নানা আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা অপচয় হল।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্লও বলেন, ‘‘২১টি ট্রেন আসবে বলে আমাদের জানানো হয়েছিল। সেই মতো পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়। তবে সব ট্রেন না আসায় কর্মীদের কিছুটা হয়রান হতে হয়েছে।’’
যদিও কাটোয়া স্টেশন ম্যানেজার অরূপকুমার সরকার জানান, ২১টি ট্রেনের মধ্যে পাঁচটি ট্রেনে ৬৩৭ জন শ্রমিক নেমেছেন। একটি ট্রেন পুরোপুরি খালি ছিল। রামপুরহাটের কাছে মুরারই ও বাঁশলই সেতুর কাছে রুট-ব্লক উঠে যাওয়ায় ট্রেনগুলি আর এ দিকে আসেনি, দাবি তাঁর। পূর্ব রেলের এক আধিকারিকও দাবি করেন, ট্রেন কোন দিকে, কখন যাবে তা নিয়ে যা তথ্য, নির্দেশ ছিল সে মোতাবেক জানানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রুট-ব্লক উঠে যাওয়ায় ট্রেন কাটোয়া যায়নি। তা ছাড়া, কত সংখ্যক শ্রমিক ট্রেনে আসবেন, তা বলা সম্ভব নয়, দাবি তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy