কোর্টে কামরুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র
এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের দায়ে ‘চেন-খুনি’ কামরুজ্জামান সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করল কালনা আদালত। আগামী সোমবার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল সাজা ঘোষণা করবেন।
গত কয়েকবছরে পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়ে ঢুকে মহিলাদের গলায় চেন পেঁচিয়ে খুন বা খুনের চেষ্টা করে জিনিসপত্র লুটের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাগুলিতে অভিযুক্ত কামরুজ্জামানকে গত ২২ জুলাই কালনার কাঁকুরিয়ার রাস্তায় গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের মধ্যে কালনা মহকুমাতেই রয়েছে ন’টি মামলা। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ৩০ মে কালনার সিঙেরকোনে এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের মামলায় কামরুজ্জামানকে বৃহস্পতিবার আদালত দোষী সাব্যস্ত করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিঙেরকোনের ওই নাবালিকার মা পরিচারিকার কাজ করেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তিনি কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দেখেন, রক্তাক্ত হয়ে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে রয়েছে বছর চোদ্দোর মেয়ে। প্রথমে কালনা মহকুমা হাসপাতাল, পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। ২০১৯-এর ১২ জুন তার মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি, গ্রেফতার হওয়ার পরে কামরুজ্জামান তাদের কাছে ওই ঘটনায় দোষ স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ এবং ‘পকসো’-৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। গত বছর ২৫ অগস্ট মামলায় চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। ৭ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠন হয়।
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ কালনা উপ-সংশোধনাগার থেকে আদালতে পুলিশ লক-আপে আনা হয় কামরুজ্জামানকে। দুপুর ২টো ২০ মিনিট নাগাদ বিচারক জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। সোমবার সাজা ঘোষণা হবে। কামারুজ্জমান এ দিন দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
‘চেন-খুনি’র মামলার জন্য বিশেষ ভাবে নিযুক্ত সরকারি আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা বলেন, ‘‘এই মামলায় মোট ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। নাবালিকার উপরে যে পাশবিক যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল, সে বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন এক চিকিৎসক।’’ এ দিন আদালতে তিনি নাবালিকার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও যে বাড়িতে খুনের ঘটনা ঘটেছিল সেটির ‘সিল’ খুলে দেওয়ার আর্জি জানান। কামরুজ্জামানের আইনজীবী অরিন্দম বাজপেয়ীর দাবি, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে বেআইনি অনুপ্রবেশের যে ধারা দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথ ভাবে প্রমাণিত নয়। মামলায় চুরির কোনও ধারা না থাকলেও আলমারির একটি ভাঙা কাচের সঙ্গে তার মক্কেলের আঙুলের ছাপ মেলানো হয়েছে।
এ দিন আদালতে এসেছিলেন কামরুজ্জমানের স্ত্রী জাহানারা বিবি। তাঁর দাবি, স্বামী নির্দোষ। আদালত কক্ষের বাইরে বসেছিলেন নিহত নাবালিকার মা। তিনি বলেন, ‘‘সব ক’টি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে শুনে খুশি হয়েছি। আমি চাই, ফাঁসির সাজা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy