Advertisement
E-Paper

Misti Hub: ‘মিষ্টি হাব’ খুলতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “মিষ্টি হাব যদি না খোলে, তা হলে ছ’মাসের মধ্যে অন্য লোককে দিয়ে দাও। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দাও।’’

বন্ধ মিষ্টি হাবের দরজা।

বন্ধ মিষ্টি হাবের দরজা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৪
Share
Save

বন্ধ থাকা ‘মিষ্টি হাব’ দ্রুত খুলতে পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসনকে বুধবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “মিষ্টি হাব যদি না খোলে, তা হলে ছ’মাসের মধ্যে অন্য লোককে দিয়ে দাও। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দাও। তারা মিষ্টি তৈরি করবে।’’ তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়ার জন্য তিনি জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলাকে নির্দেশ দিয়েছেন। পরে, জেলাশাসক বলেন, “আগামী ৬ মে ‘মিষ্টি হাব’ নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন মহকুমাশাসক (বর্ধমান সদর)। ওই বৈঠকে আমি হাজির থাকব। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো এগোনো হবে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের উল্লাস মোড়ে ‘মিষ্টি হাব’ৃএর দোতলা ভবনে বেশ কয়েকটি দোকান তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বর্ধমান ছাড়াও, হুগলি, কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বড় ব্যবসায়ীরা দোকান নিয়েছিলেন। ৬ মে-র বৈঠকে কারা দোকান খুলতে ইচ্ছুক আর ব্যবসা করতে অনিচ্ছুক তাঁদের কাছে লিখিত মুচলেকা নেওয়া হবে। যাঁরা ‘অনিচ্ছুক’, তাঁদের বদলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য নবান্ন’-এর কাছে প্রস্তাব পাঠাবে জেলা প্রশাসন।

বস্তুত ‘মিষ্টি হাব’-এর পথ চলায় জট গোড়া থেকেই। প্রথমে ওই হাব কাঞ্চননগরে হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানান। তখন দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জায়গা নির্বাচন করে জেলা প্রশাসন। ওই জায়গার জমিদাতারা আপত্তি জানিয়ে আন্দোলনে নামেন। তখন মুখ্যমন্ত্রী জানান, জমিদাতারা না চাইলে, সেখানে ‘মিষ্টি হাব’ হবে না।

তখন জেলা প্রশাসন অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পাশে, ২৭ কাঠা জমির উপরে একটি জায়গা ঠিক করে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতর ‘মিষ্টি হাব’ তৈরির জন্য প্রথম ধাপে দু’ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। তাতে ১৭টি দোকান ও একটি বড় সভাগৃহ তৈরি হয়েছে।

২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল আসানসোল থেকে ‘মিষ্টি হাব’-এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে, আরও দু’কোটি টাকা খরচ করে দোতলা করা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ দোকানের ‘শাটার’ কোনও দিনই ওঠেনি। দু’-একটি দোকান টিমটিম করে চলছিল। সেগুলিও বন্ধ। বর্তমানে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ‘মিষ্টি হাব’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

‘সীতাভোগ-মিহিদানা’ ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নেতা প্রমোদ সিংহের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনে নির্দেশ জানা নেই। তবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন না বলে দোকান বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’ ওই সংগঠনের আর এক কর্তা দেবাদিত্য চক্রবর্তী বলেন, “সীতাভোগ-মিহিদানা তো বটেই, ওই হাব মিষ্টির গবেষণাগার হয়ে উঠুক। সরকারি ভাবে সীতাভোগ-মিহিদানা রফতানি করার ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খড়্গপুরের আইআইটির এক দল গবেষক ‘মিষ্টি হাব’ ঘুরে গিয়েছেন। কী ভাবে ‘মিষ্টি হাব’ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, তা নিয়ে তাঁরা মে মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট দেবেন জেলাশাসকের কাছে। ব্যবসায়ীদের দাবি মতো সীতাভোগ-মিহিদানার গুণমান বৃদ্ধি করে রফতানি যোগ্য করার উপায়ও গবেষকেরা বাতলে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য দিকে, তাপপ্রবাহের মধ্যে জেলার চাষিরা কেমন আছেন, তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক বলেন, “তাপপ্রবাহ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করা হয়েছে।’’ চাষিদের জলের ব্যবস্থা ঠিক আছে কি না, তা-ও খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা তথা রায়নার বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার বলেন, “সব ঠিক আছে। তবে বুলবুল, ইয়াস মে মাসে হয়েছিল। সে কারণে এখন থেকেই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৭৫ শতাংশ ধান পেকে গেলে, কেটে নিতে বলা হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী যন্ত্রে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেন।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর এক লক্ষ ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। তার মধ্যে সাত শতাংশ ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ জেলায় বোরো ধান যন্ত্রের মাধ্যমে কাটাটাই দস্তুর হয়ে উঠছে।

মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পরেই ‘মাটি উৎসব’ শুরু করেছিলেন। পরে, শুধু মাটি উৎসবের জন্য বর্ধমানে ‘মাটি তীর্থ’ নামে একটি প্রাঙ্গন তৈরি হয়। এ দিন জেলাশাসকের কাছে ‘মাটি তীর্থ’ নিয়েও খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী।

Misti Hub Bardhaman

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}