—প্রতীকী চিত্র।
ভালবেসে বিয়ে করেছেন, বিয়ের জন্য বদলেছেন ধর্ম। সবটাই জানতেন স্বামীর পরিবার। কিন্তু তা সত্ত্বেও নতুন বউকে বাড়িতে ঠাঁই দিতে নারাজ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে, শ্বশুরবাড়িতে অধিকার আদায়ের জন্য ওই বধূর পাশে দাঁড়িয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার নৈহাটি গ্রামের মাসিসাঁকো পাড়ার বাসিন্দা বাসুদেব বারুই ও অঞ্জনা বারুইয়ের তিন ছেলে। তাঁদের মধ্যে বড় সুমন বারুই। সুমন উত্তরপ্রদেশে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। আর সেই সুবাদেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলা এলাকার বছর বাইশের মেয়ে সাহিদা খাতুনের। তার পর দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পর, পরিবারের অমতে গিয়ে সাহিদা নিজের ধর্ম পরিবর্তন করেন। সাহিদা খাতুন থেকে নাম পাল্টে হন লক্ষ্মী। হিন্দু মতেই বিয়ে করেন তাঁরা।
উত্তরপ্রদেশে স্বামীর সঙ্গে মাস দুয়েক ছিলেন লক্ষী। সোমবার তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়িতে আসতেই শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, তাঁর স্বামীর পরিবারের লোকেরা তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। লক্ষী বাড়ির দরজার সামনেই বসে কান্নাকাটি করছিলেন। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেই থেকে লক্ষ্মী পুলিশের আশ্রয়েই রয়েছেন। বুধবার গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা কেতুগ্রাম থানায় যান। তাঁদের দাবি, শ্বশুরবাড়ির অধিকার দিতে হবে লক্ষ্মীকে।
সাহিদা ওরফে লক্ষ্মী বলেন, “আমাদের দু’জনেরই ধর্ম আলাদা। তাই আমার পরিবার সম্পর্কটি মেনে নেয়নি। আমি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আইনি প্রক্রিয়া মেনে ধর্ম পরিবর্তন করি। তার পর ওখানেই একটি মন্দিরে গিয়ে দু’জনে হিন্দু মতে বিয়ে করি।” এই ঘটনাটি লক্ষীর স্বামী সুমনের পরিবার না মানলেও, ওই গ্রামের বাসিন্দারা এই সম্পর্কটি মেনে নিয়েছেন। এমনকি শ্বশুরবাড়িতে সকলকে নিয়ে যাতে লক্ষী থাকতে পারেন তার জন্য গ্রামের একাংশ পুরুষ ও মহিলা মিলে বুধবার কেতুগ্রাম থানায় যান। তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানান তাঁরা। দাবি, লক্ষ্মীকে তার শ্বশুরবাড়িতে পূর্ণ মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে দিতে হবে।
নৈহাটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সাধন রায় এবং দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, “বিয়ের পর সুমন ওঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজের বাড়িতে এসেছিলেন। নৈহাটি গ্রামেই দু’জন বেশ কিছুদিন ছিলেন। মাস দুয়েক আগে স্ত্রীকে নিয়ে কর্মস্থলে চলে যান সুমন। আমরা সবাই জানতাম ওঁরা ওখানেই সুখে ঘরসংসার করছে। কিন্তু গত সোমবার দেখি লক্ষ্মী একাই নৈহাটি চলে এসেছেন। কিন্তু, ওঁকে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শ্বশুরবাড়ির দরজার সামনেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসেছিলেন লক্ষ্মী। ওঁর শ্বশুর-শাশুড়িকে অনেক বুঝিয়েছি আমরা। কিন্তু ওঁরা এখনও লক্ষ্মীকে মেনে নিতে পারছেন না।”
অন্য দিকে লক্ষ্মীর শ্বশুর ও শাশুড়ি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। তাঁর স্বামী সুমন অবশ্য এখন উত্তরপ্রদেশেই আছেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হয়। এ বিষয় সুমনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy