Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

শূন্য থেকে দুইয়ে পৌঁছেও কোণঠাসা বাম

একসময়ের খাসতালুকে পাঁচ বছর আগে খাতাই খুলতে পারেনি সিপিএম। তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের কাছে স্রেফ উড়ে গিয়েছিল। এ বার ২টি আসনের দখল পেলেও পাঁচ বছরের ব্যবধান মুছে যাওয়ার ছাপ সেভাবে পড়ল না মেমারিতে। এ বার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থীরা। তবে হেরে গিয়েছেন পুরভোটের ‘সেনাপতি’ তথা সিপিএম নেতা বিনয় কোঙারের ছোট ছেলে অভিজিত কোঙার। ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৬০টি ভোট পেয়েছেন তিনি। জয়ী প্রার্থী তৃণমূলের বিদ্যুৎ দে পেয়েছেন ৭৪১টি ভোট। সিপিএমের দাবি, কংগ্রেসও কিছুটা ভোট কেটেছে সিপিএমের।

জয়ের পরে আবীরে রাস্তা দখল এক তৃণমূল কর্মীর। —নিজস্ব চিত্র।

জয়ের পরে আবীরে রাস্তা দখল এক তৃণমূল কর্মীর। —নিজস্ব চিত্র।

রানা সেনগুপ্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৩
Share: Save:

একসময়ের খাসতালুকে পাঁচ বছর আগে খাতাই খুলতে পারেনি সিপিএম। তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের কাছে স্রেফ উড়ে গিয়েছিল। এ বার ২টি আসনের দখল পেলেও পাঁচ বছরের ব্যবধান মুছে যাওয়ার ছাপ সেভাবে পড়ল না মেমারিতে।

এ বার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থীরা। তবে হেরে গিয়েছেন পুরভোটের ‘সেনাপতি’ তথা সিপিএম নেতা বিনয় কোঙারের ছোট ছেলে অভিজিত কোঙার। ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৬০টি ভোট পেয়েছেন তিনি। জয়ী প্রার্থী তৃণমূলের বিদ্যুৎ দে পেয়েছেন ৭৪১টি ভোট। সিপিএমের দাবি, কংগ্রেসও কিছুটা ভোট কেটেছে সিপিএমের। অথচ এই ওয়ার্ডে অনেক পরিকল্পনা করে অভিজিৎবাবুকে দাঁড় করিয়েছিল সিপিএম। দলের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সনত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “দলের নিয়ম হল পরপর তিন বার কেউ ভোটে দাঁড়ালে তার পরের বছর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না তিনি। তাই গত বার অভিজিৎবাবু পুর নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেননি। কিন্তু এ বার ওঁকে দাঁড় করানো হয়েছে।”

দলের নেতা-কর্মীদের মতে, অভিজিৎবাবুকে মুখ করেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল দল। তার সঙ্গে জুটি বেধেছিল একের পর এক তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনাও। মেমারির এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘পুরসভা পরিচালনা নিয়ে দুনীর্তির অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ যেভাবে বাড়ছিল তাতে মনে হয়েছিল মানুষ আমাদের ফেরাবেন।’’ তাহলে নিজেরা কিছু না করে কী অন্যের পালে হাওয়া না থাকাকেই পুঁজি করে জয়ের আশা করেছিল সিপিএম? বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের দাবি, প্রতিরোধি হয়তো খামতি থেকে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘মেমারিতে আমরা আরও ভাল ফল আশা করেছিলাম। তবে হতাশ নই, কেন এমন হল খতিয়ে দেখা হবে।’’

সিপিএম সূত্রেও জানা যায়, ভোটের আগে যতখানি ঘুরে দাঁড়ানো, প্রতিরোধের কথা বলেছিলেন নেতারা, বাস্তবে তা দেখা যায়নি। বরং যত ভোট এগিয়েছে ততই মারধর, সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা গিয়েছে তাঁদের মুখে। বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সনত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতে বলেছিলেন, “এ বার আমরা ছক উল্টে দেব। উল্টো হাওয়া বইবে। আমরাই ১৬-০ ফলে জিতব।” কিন্তু ভোট যতই এগিয়ে আসতে লাগলো ততই ভাটা পড়ে নেতা-কর্মীদের আত্মবিশ্বাসে। পরে ১৬-০ তো দূর শুধু ‘ভাল ফল করব’—এ কথা শোনা যায় তাঁদের মুখে। দুপুরের পরে কিছু বুথে ছাপ্পা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অচিন্ত্যবাবুও। যদিও ভোটের দিন এ অভিযোগ ততটা শোনা যায়নি তাদের মুখে।

আর সব শেষে অভিজিৎবাবু বলেন, “জনগণের এই রায় আমরা মাথা পেতে নিলাম। গত বার শূন্যতে ছিলাম। হারাবার কিছু ছিল না। এ বার আমরা দুটি আসন পেয়েছি। ভোটপ্রাপ্তির পরিমাণও আগের চেয়ে বেশি। তবু মানুষের সম্পূর্ণ সহানুভূতি আমাদের দিকে ছিল না বলেই মনে হচ্ছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy