বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। ছবি: পাপন চৌধুরী
রাত পোহালেই ভোট আসানসোলে। তার আগে, রবিবার আসানসোলের প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পারদ যেন আরও চড়ল শাসক-বিরোধীর তোপ-পাল্টা তোপকে কেন্দ্র করে। সব পক্ষই শেষ লগ্নে প্রচারে ঝড় তোলার চেষ্টা করেছে। এ দিন তৃণমূলের হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিজেপির হয়ে দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, কংগ্রেসের হয়ে অধীর চৌধুরীরা প্রচার চালান। প্রচার চালিয়েছে সিপিএমও।
ঘটনাচক্রে, এ দিন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ভোট কতটা সুষ্ঠু ভাবে হবে, তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, সন্ত্রাসের অভিযোগও করেছেন। দিলীপ এ দিন দুর্গাপুরে বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী কি জনে-জনে পাহারা দেবে? তাঁরা রাস্তায় ঘুরছেন। বুথে দু’জন নেতা থাকবে, পাড়ায় গিয়ে বসে থাকবে। তার পরে অজয় পেরিয়ে বীরভূম থেকে গুন্ডা আনবে তৃণমূল। তারা এসে দখল করে নেবে এলাকা। তাদের দেখে কেউ বেরোবেই না ভোট দিতে। ভোটটা হবে কী করে?” পাশাপাশি, সামগ্রিক ভাবে মানুষের ‘নিরাপত্তাহীনতা’ নিয়েও সরব হন তিনি। বলেন, “নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে সত্যিই কত জন ভোট দিতে আসবেন, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। ভোট যদি ঠিক ভাবে না হয় তাহলে জেতা, হারার প্রশ্নই থাকে না।” যদিও বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের প্রতিক্রিয়া, “আমাদের নেতা শুধু আশঙ্কার কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে তিনি প্রতিরোধের বার্তাও দিয়েছেন।”
নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। এ দিন দলীয় প্রার্থী প্রসেনজিৎ পুইতণ্ডীর সমর্থনে আসানসোলে মিছিল করেন অধীর। ছিল, আদিবাসী নৃত্যের আয়োজনও। মিছিল শেষে অধীরের অভিযোগ, “দেখে মনে হচ্ছে, এটা পঞ্চায়েত বা পুরসভার ভোট। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে জানি। কিন্তু তার পরেও, তৃণমূলের মস্তান বাহিনী রাজ্য পুলিশের মদতে আমাদের প্রার্থীর প্রচার-সরঞ্জাম নষ্ট করছে। আমি বিষয়টা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি জানি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে না। তবুও আবেদন জানাব, অবাধ ও ভয়মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন হোক।”
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি জেলার বেশ কয়েকটি সীমানা এলাকা দিয়ে ভিন্-জেলা থেকে ভোট লুট করার জন্য ‘দুষ্কৃতী’দের নিয়ে আসতে পারে তৃণমূল, এই মর্মে আশঙ্কা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছিল সিপিএম। সেই রেশ টেনেই সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে, ভাল কথা। কিন্তু তার গতিবিধি যেন কোনও ভাবেই রাজ্য পুলিশের হাতে না থাকে, সেটা কমিশনকে দেখতে হবে। তা না হলে, সুষ্ঠু ভোট কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।” ঘটনাচক্রে, সিপিএমের তরফে, গত আসানসোল পুরভোটের দিন তৃণমূল ‘ভোট লুট’ করেছিল, এমন অভিযোগ ফের করা হয়েছে। তৃণমূল তা মানেনি।
তবে এ সব শুনে ভোটের আগেই ‘হেরে বসেছে বিজেপি-সহ বিরোধীরা’, এমন দাবি করছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়। বলছেন, “দিলীপবাবু বুঝে গিয়েছেন, ওঁদের হার নিশ্চিত। তাই এ সব বলছেন। আর অন্য বিরোধীরা অস্তিত্বহীন।” তৃণমূল নেতৃত্ব আরও জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীতে কার্যত গোটা রাজ্য ‘মুড়ে দিয়ে’ বিধানসভা ভোট হয়েছিল। তার পরেও বিজেপি হেরেছে। সুতরাং, কেন্দ্রীয় বাহিনীতেও যে আর বিজেপির আস্থা নেই, তা দিলীপের কথায় স্পষ্ট, কটাক্ষ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের। পাশাপাশি, তিনি জানাচ্ছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডার-সহ রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের সুফল ঘরে-ঘরে মানুষ পেয়েছেন। তাঁর দাবি, এর সুফল তাঁদের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হাও ভোটে পাবেন। এই আবহে, রাত পোহালেই জনতার মন কোন দিকে ঢলে, সে দিকে তাকিয়ে সব পক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy