এই গর্ত নিয়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
সকাল সাড়ে ১০টা। এলাকাবাসী দেখলেন, সরকারি কুয়োর কাছে গর্ত। কারও বুঝতে অসুবিধা হল না ধস নেমেছে। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের তিরাট পঞ্চায়েতের হাড়াভাঙা গ্রামের ঘটনা। এর জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। এই পরিস্থিতিতে ধসের মোকাবিলায় ইসিএলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্গা মন্দির লাগোয়া এলাকায় একটি পুরনো সরকারি কুয়ো আছে। অদূরেই বাড়ি স্বপন গাঁধী ও অভিজিৎ খাঁয়ের। তাঁরা জানান, দেখা যায় ধসের ফলে গর্ত তৈরি হয়েছে। গর্তের মুখটি ফুট তিনেকের। এলাকাবাসীর দাবি, ধীরে ধীরে গর্তটির গভীরতা বেড়ে যায়।
এই পরিস্থিতিতে ইসিএলের সার্ভেয়ার দফতরের কর্মীরা গর্তের মুখ ভরাট করতে আসেন। কিন্তু বাসিন্দারা তাঁদের ফিরিয়ে দিয়ে দাবি জানান, ইসিএল যন্ত্রের সাহায্যে গর্তের গভীরতা মাপুক। তার পরে তা ভরাট করা হোক।
এই এলাকায় ধস নতুন কোনও ঘটনা নয়। তিরাটের বাসিন্দা অনল মুখোপাধ্যায় জানান, এর আগে হাড়াভাঙার প্রাথমিক স্কুলের পুরনো ভবন ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। তার পরে ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এলাকায় ইসিএলের ভূগর্ভস্থ খনি থেকে অতীতে কয়লা তোলার পর ঠিক ভাবে বালি ভরাট না করাতেই এমনটা বারবার হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাড়াভাঙা গ্রামের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন খনিকর্মী ফটিক গোপ জানান, বছর দশেক আগে দুর্গামন্দিরে পিছনে ইসিএলের বালির ব্যাঙ্কার ছিল। তার পরেও ভূগর্ভে বালি ভরাট করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা জীবন গোপের বক্তব্য, ‘‘এই পাড়ায় ২৮৪টি পরিবার রয়েছে। কখন কোথায় ধস নামে, এই ভেবে সবাই আতঙ্কে রয়েছেন।’’
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিকেলে তিরাট পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মী হেমব্রম এবং সদস্য শিবদাস চট্টোপাধ্যায়। শিবদাসবাবু জানান, তাঁরা এলাকাবাসীর পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছেন। লক্ষ্মীদেবী বলেন, ‘‘ইসিএলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ঠিক পদ্ধতিতে সমীক্ষা করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। পঞ্চায়েতও এই কাজে পাশে থাকবে।’’
সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১৯৯৫-এ ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ খনিটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খনির উপরি ভাগে ‘র্যাটহোল’ (ছোট মুখের গর্ত) তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। আজ, শনিবার থেকে গর্ত ভরাটের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি, সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘গ্রামবাসীকে বোঝানো হচ্ছে, দ্রুত গর্তটি ভরাট না করা গেলে আগুন ধরে যেতে পারে। তার জেরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধসের ঘটনা ঘটতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy