ভাগীরথীর উপরে এই এলাকা দিয়েই সেতু হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
ভাগীরথীর উপরে কালনা এবং নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে সেতু তৈরির কাজ শেষ হবে ২০২২ সালে, ২০১৮-য় কালনায় একটি সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনই দাবি করেছিলেন। তবে এখনও পর্যন্ত সেতু তৈরির জন্য জমি কেনার কাজই শেষ করতে পারেনি প্রশাসন। ফলে, কবে সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে, কবেই বা শেষ হবে, উঠেছে প্রশ্ন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুর জন্য শান্তিপুর এবং কালনা ২ ব্লকের পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের চারটি মৌজায় জমি কিনতে হবে। শান্তিপুরে জমি কেনার কাজ এগিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। কালনার বারাসত মৌজায় ৬.৩৪০৫ একর, হাঁসপুকুর মৌজায় ১৩.৭১৯৭ একর, কুলিয়াদহ মৌজায় ১৫.৯১৫৯ একর এবং পূর্বসাহাপুর এলাকায় ১২.০৭৩৫ একর জমি কেনার প্রয়োজন রয়েছে। মৌজাগুলির ১৩৮টি প্লটের মালিক চারশোরও বেশি মানুষ। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত জমি কেনার কাজ হয়েছে ২১টি প্লটে। যার পরিমাণ ৭.৬৫৩৭ একর। ৬৯টি প্লটে জমি পরিদর্শনের কাজ চলছে।
পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস সরকারের দাবি, সেতু তৈরির জন্য জমির সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেতুর জন্য জমি দিতে চান এলাকার বেশির ভাগ মানুষই। ফলে, জমি কিনতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনার রাস্তার পাশের কিছু জমি এবং বাড়ির মালিক বেশি দর চেয়েছেন বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসনের তরফে অবশ্য তাঁদের কাছ থেকে বেশি দরে জমি কেনার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ইটভাটার জমি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। বহু বার শুনানি ডেকেও সেই জমির জট খুলতে পারেনি প্রশাসন। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘সেতুর কাজ কবে শুরু হবে জানা নেই। তবে প্রায় ৬০ জন চাষি নিজেদের জমির নথিপত্র প্রশাসনের কাছে তুলে দিয়েছেন। নথিগুলি যাচাইও হয়ে গিয়েছে। কেন তাঁদের চেক দেওয়া হচ্ছে না, সেটাই প্রশ্ন।’’ যদিও জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডুর দাবি, ‘‘সেতুর জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। বেশ কিছু জমি কেনার কাজও হয়ে গিয়েছে। বাকি জমি কেনার কাজ চলছে।’’
এ দিকে, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর জন্য জমি কেনার কাজ চলায় বিরক্ত সাধারণ মানুষ। কালনার বাসিন্দা প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহু দিন ধরেই শুনছি সেতু হবে। অথচ, এখনও প্রশাসন অর্ধেক জমি কিনতে পারেনি। আগামী এক দশকের মধ্যে সেতু তৈরির কাজ শেষ হবে কি না সন্দেহ রয়েছে।’’ আর এক বাসিন্দা অর্ধেন্দু ঘোষেরও দাবি, ‘‘কালনা এবং নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে নদীবক্ষে সেতু তৈরি হলে, এলাকায় পর্যটকদের ঢল নামবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে, এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। কিন্তু পুরোটাই বহু দূর।’’ সেতুটি নিয়ে প্রশাসন শুরু থেকেই ঢিমে তালে চলছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) এনাউর রহমান বলেন, ‘‘ভাগীরথীতে সেতুর কাজ কী অবস্থায় রয়েছে, খোঁজ নিয়ে বলব।’’
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শাসকদলের নানা প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি ছিল ভাগীরথী নদীতে সেতু। ফের নির্বাচন এসে গেলেও সেতু তৈরির কাজ না হওয়াই বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। এলাকার বিজেপি নেতা ধনঞ্জয় হালদারের দাবি, ‘‘যে ভাবে কচ্ছপের গতিতে কাজ চলছে তাতে সেতু আদৌ তৈরি হবে কি না সন্দেহ রয়েছে। মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছে, আমরা প্রচারে সব বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy