কাটোয়ার কুমোরপাড়ায় কার্তিক তৈরি। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
পথ বদলেছে কাটোয়ার ঐতিহ্যবাহী কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রার। বর্ধিত পথ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শহরে। যাঁদের দুয়ার দিয়ে কার্তিক যাবেন, তাঁরা স্বভাবতই খুশি। আর যাঁদের কাছ থেকে শোভাযাত্রা সরে গেল, তাঁরা মুষড়ে পড়েছেন খানিক। প্রশাসনের যদিও দাবি, নতুন পথে অনেক বেশি মানুষ শোভাযাত্রা দেখতে পারবেন। ভিড়় নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি করাও সহজ হবে অনেকটাই।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভাযাত্রায় প্রায় ৮৬টি পুজো কমিটি যোগ দেয়। প্রতিটি পুজো কমিটি গড়ে তিনটি করে গেট ও দু’দল বাদ্য-বাজনা নিয়ে শোভযাত্রায় শামিল হয়। তাতে প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা লাগে। কিন্তু, গত বছর পর্যন্ত পুরনো রুটের আয়তন ছিল সাড়ে তিন কিলোমিটার। ফলে অপরিসর রাস্তায় একবার যানজট বেধে গেলে শোভাযাত্রা ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকে থাকত। অনেক দর্শনার্থী বিরক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যেতেন। শোভাযাত্রা শেষ হতে রাত গড়িয়ে যেত। সেই কারণে পুরনো পথ কিছুটা কাটছাঁট করে টেলিফোন ময়নদান দিয়ে যাওয়া শোভাযাত্রা মাধবীতলার ডান দিক দিয়ে ভেঙে স্টেশনবাজার চৌরাস্তা দিয়ে সুবোধ স্মৃতি রোড দিয়ে ফের কারবালাতলায় পুরনো রুটে এসে মিশবে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার যাত্রাপথ পাড়ি দেবে শোভাযাত্রা।
নতুন রুটের মধ্যে পড়া মাধবীতলার একাংশ, স্টেশনবাজার ও সুবোধস্মৃতি রোডের বাসিন্দারা বেজায় খুশি। তাঁদের দাবি, অন্য বার কার্তিক লড়াই দেখার অপেক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হত। এ বার বাড়ি থেকেই শোভাযাত্রা দেখা যাবে। আবার মাধবীতলার একাংশ ও ভূতনাথতলার বাসিন্দাদের দাবি, শোভাযাত্রা থেকে বঞ্চিত হবেন তাঁরা। পুজো কমিটিগুলি অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য
করতে চায়নি।
এ বছর শোভযাত্রা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে এগারোশো নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে সাতশো জন পুলিশ কর্মী থাকবেন। জেলার নানা প্রান্ত থেকে ডিএসপি ও ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ নিয়ে আসা হবে। মোতায়েন করা হবে প্রায় সাড়ে তিনশো সিভিক ভলান্টিয়ার। এ ছাড়াও নিরাপত্তার জন্য প্রচুর সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী নজরদারি করবেন। নিরাপত্তায় জোর দিতে সংহতি মঞ্চের সামনে ও স্টেশনবাজার চৌরাস্তায় ২০ ফুট বাই ৮ ফুটের বড় দু’টি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হবে। বর্ধিত পথে অতিরিক্ত ২০টি সিসিটিভি বসানো হবে। শোভাযাত্রার পথে তিনটি করে পুলিশ, দমকল ও মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানো হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিচুবাজারের এক পুজো কমিটির সম্পাদক বলেন, “বর্ধিত রুটের জন্য আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে। বাজনাদারেরা অত বড় রুটে ঘুরতে চাইবে কি না, তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছে। খরচ বেশি পড়বে। পুজো উদ্যোক্তাদেরও শেষের দিকে শোভাযাত্রা নিয়ে যেতে গিয়ে বেগ পেতে হবে।’’
মহকুমা শাসক (কাটোয়া) অর্চনা পন্ধরিনাথ ওয়াংখেড়ের দাব, বর্ধিত পথে শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়ায় অনেক সুবিধা হবে। স্টেশন বাজার রোডের একটা দিক সব সময়ই খোলা থাকবে। যে কোনও প্রকার জরুরি কাজের জন্য বিকল্প পথ ভেবে রাখা হয়েছে। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সব দিক বিবেচনা করেই শোভাযাত্রা বর্ধিত পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy