Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ফসকে যাওয়া তিন শিকার চেনাল ‘চেন-খুনি’কে

কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামের লক্ষ্মীবালাদেবী বেলা দশটা নাগাদ ছেলে ভক্তিপদ পালকে নিয়ে চলে এসেছিলেন সংশোধনাগারে। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার দাবি, মাস পাঁচেক আগের ঘটনা ছবির মতো মনে আছে তাঁর।

কামরুজ্জামান। —ফাইল চিত্র।

কামরুজ্জামান। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

মাঘ মাসের সকাল। কালো জ্যাকেট, আঁটসাঁটো প্যান্ট পরে বিদ্যুতের মিটার দেখার নাম করে সটান বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল যুবক। বাড়িতে একা বৃদ্ধা সিঁড়ির তলায় মিটারের বাক্স দেখানোর জন্য পিছন ফিরতেই গলায় পেঁচিয়ে দিয়েছিল লোহার চেন। ছেলে বাড়ি ফিরে আসায় আততায়ীর হাত থেকে সে যাত্রা কোনও রকমে বেঁচে ফিরেছিলেন বৃদ্ধা লক্ষ্মীবালা পাল। মঙ্গলবার টিআই প্যারেডে সার দিয়ে দাঁড়ানো অভিযুক্তদের মধ্যে তিনি চিনিয়ে দিলেন সে দিনের আততায়ী কামরুজ্জামান সরকারকে। কালনা সংশোধনাগারে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে আরও দু’জন এ দিন চিহ্নিত করেন ‘চেন-খুনি’কে।

কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপলতি গ্রামের লক্ষ্মীবালাদেবী বেলা দশটা নাগাদ ছেলে ভক্তিপদ পালকে নিয়ে চলে এসেছিলেন সংশোধনাগারে। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার দাবি, মাস পাঁচেক আগের ঘটনা ছবির মতো মনে আছে তাঁর। বেলা ৩টে নাগাদ জেএম ২ প্রজ্জ্বল ঘোষ কালনা উপসংশোধনাগারে পৌঁছতেই শুরু হয় টিআই প্যারেড। প্রথমে ডাক পড়ে হাটকালনা পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙা গ্রামের ইতি হাওলাদারের। অভিযোগ, বছর আঠারোর এই বধূকেও বাড়িতে মিটার দেখার নাম করে ঢুকে গলায় চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করছিল কামরুজ্জামান। এর পরে চেন-খুনিকে শনাক্ত করেন লক্ষ্মীবালাদেবী ও তাঁর ছেলেও।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টিআই প্যারেডে ১০ জন অভিযুক্তকে রাখা হয়। প্রত্যেকের পরনে ছিল লুঙি। কামরুজ্জামানকে বারবার জায়গা বদলে দাঁড় করানো হয়। বদলে দেওয়া হয় পোশাক। বন্ধ রাখা হয় সংশোধনাগারের সমস্ত সিসিটিভি। যদিও তিন জনের প্রত্যেকেই এক বারে নির্ভুল ভাবে কামরুজ্জামানকে চিনিয়ে দেন বলে জানা গিয়েছে। বেরিয়ে এসে ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘রোগা হয়েছে লোকটা। কিন্তু ওর মুখটা আমি ভুলতে পারিনি। সে দিনের আতঙ্কও ভুলিনি। এক বারেই চিনতে পেরেছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ঘটনার দিন লাল রঙের হেলমেট আর লোহার চেন রেখে পালিয়েছিল আততায়ী। পালিয়ে যাওয়ার আগে তাঁর হাত থেকে সোনার বালা জোড়া খুলেও নিয়েছিল ধৃত। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘অনেক খুন করেছে। ওর ফাঁসি দরকার।’’ ভক্তিপদবাবু বলেন, ‘‘সে দিন মাঠে আলুর জমিতে ওষুধ দিতে গিয়েছিলাম। ফিরে দেখি এক জন বাড়ির সামনে দিয়ে পালাচ্ছে। দেখেই চিনতে পেরেছি।’’ ধর্মডাঙার বাসিন্দা ইতিদেবীরও দাবি, সাত মাসের মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে একা ছিলেন তিনি। মিটার দেখতে এসেছে, বলায় সন্দেহ হয়নি। ওই চেহারা ভোলার নয়।

তদন্তকারীদেরও দাবি, তিন জনেই ঠিক ভাবে চিনিয়ে দিয়েছেন কামরুজ্জামানকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Serial Killer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy