স্কুলের অদূরেই বেরোচ্ছে ধোঁয়া। অণ্ডালের মাধবপুরে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
মাঝে-মধ্যে মাটির ফাটল দিয়ে ধোঁয়া বেরোয়। আতঙ্কে ভোগেন বাসিন্দারা। শনিবার থেকে গলগল করে ধোঁয়া ও মাঝে-মধ্যে আগুন বেরোতে থাকায় আতঙ্ক বেড়েছে ইসিএলের কাজোড়া এরিয়ার মাধবপুর খোলামুখ খনি লাগোয়া এলাকায়। যেখান দিয়ে ধোঁয়া-আগুন বেরোচ্ছে তা ভরাট করা হচ্ছে বলে ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই খোলামুখ খনির পাশেই হরিশপুর গ্রাম। প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ধান্ডাডিহি গ্রাম। দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, খনি লাগোয়া এলাকায় ধোঁয়া মাঝে-মধ্যেই ধোঁয়া বেরোয়। তার পরিমাণ বেড়ে গেলে বিপাকে পড়তে হয়। তখন বাড়ির জানলা-দরজা খুলে রাখা মুশকিল হয়। হরিশপুরের বাসিন্দা তপন পাল, ভগীরথ দত্তেরা জানান, শনিবার রাত থেকে খনির পাশেই তিনটি জায়গা থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করেছে। মাঝে-মাঝে আগুনও দেখা যাচ্ছে।
হরিশপুর গ্রাম ১৯৯৮ সালে পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। তার পরে প্রক্রিয়া বিশেষ এগোয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁরা জানান, ধোঁয়া বেরনো বেড়ে গেলে শ্বাসকষ্ট হয়। খনির কাছেই হরিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানকার শিক্ষক শঙ্কর চৌধুরী জানান, ধোঁয়ায় স্কুল চত্বর ঢেকে যাচ্ছে। অভিভাবকেরা পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। তিনি দাবি করেন, ‘‘খনি কর্তৃপক্ষ বারবার মাটি দিয়ে ধোঁয়া বেরনোর মুখ ভরাট করলেও স্থায়ী সমাধান হয় না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।”
ধান্ডাডিহির বাসিন্দা সত্যনারায়ণ ভাণ্ডারি, অজয় পাত্রেরা জানান, দেড় দশক আগে ধান্ডাডিহি গ্রামকেও ধসপ্রবণ এলাকা হিসেবে পুনর্বাসনের জন্য চিহ্ণিত করা হয়েছে। গ্রামের সীমানায় মাঠের একাংশ ধসের জেরে বসে গিয়েছে। দু’টি গ্রামের বাসিন্দারাই দ্রুত পুনর্বাসনের দাবিতে জানিয়েছেন খনি কর্তৃপক্ষের কাছে। সিটু নেতা প্রবীর মণ্ডল, এআইটিইউসি-র গুরুদাস চক্রবর্তী, কেকেএসসি-র গুরপ্রসাদ চক্রবর্তীদের দাবি, এই এলাকায় প্রায় তিন দশক আগে ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। ধান্ডাডিহি খোলামুখ খনি চালু হওয়ার পরে সেটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। বছর আটেক আগে নতুন করে ঠিকা সংস্থার মাধ্যমে মাধবপুর খোলামুখ খনি চালু করে ইসিএল। কিন্তু আশপাশের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ধসের জেরে এই জনপদ বিপদে পড়তে পারে যে কোনও সময়ে, আশঙ্কা তাঁদের।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, মাধবপুরে ভূগর্ভস্থ খনির উপরিভাগ যাতে ধসে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে ভূগর্ভে কয়লার স্তম্ভ ছেড়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরে সমীক্ষা করে দেখা যায়, খনিমুখ বা কোনও ফাটল দিয়ে বাতাস ভূগর্ভে ঢুকে পড়ার জেরে সেই কয়লার স্তম্ভে আগুন ধরে গিয়েছে। আগুনে যাতে সংলগ্ন এলাকার কয়লাস্তর নষ্ট না হয়, সে জন্য খোলামুখ খনির মাধ্যমে ভূগর্ভের স্তম্ভ-সহ মজুত কয়লা কেটে নিতে খোলামুখ খনি চালু করা হয়। নীলাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘মাটির নীচে আগুন আছে। উপরের স্তর আলগা হয়ে গেলে অক্সিজেন ঢুকে নীচের চাপা আগুন বাইরে বেরিয়ে আসে। তা থেকে ধোঁয়া বেরোয়।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর পুনর্বাসনের কাজ করছে। ধসপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত সব এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy