শীত পড়তেই বাংলার বিভিন্ন জেলায় তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন কাজের সন্ধানে। নিজস্ব চিত্র।
নলেন গুড় ছাড়া বাঙালির শীতকাল অসম্পূর্ণ। কিন্তু খাঁটি গুড়ের সন্ধান পাওয়া ক্রমেই দুষ্কর হয়ে পড়ছে। মূল কারণ, এখন খেজুর গাছের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে।
তার পরেও সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে কিছু কিছু এলাকায় এখনও তাজা নলেন গুড় তৈরি হয়। সে রকমই একটা জায়গা পূর্ব বর্ধমানের অভিরামপুর। মানকর সংলগ্ন এই এলাকার সভাহরণ পুলের কাছে এলেই দেখা যাবে বেশ কিছু ‘পাসি’ এখানে তাদের অস্থায়ী সংসার পেতেছেন। এই পাসিরা হলেন মরশুমি জীবিকার মানুষ। তাঁরা প্রতি শীতে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন।
এই পাসিদের জীবন এবং নলেন গুড়ের ভিয়েন নিয়ে নরেন্দ্রনাথ মিত্র লিখেছিলেন, বিখ্যাত গল্প ' রস'। হিন্দিতে এই গল্প নিয়ে নূতন আর অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে তৈরি হয় ' সওদাগর'।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে চালু হচ্ছে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস
রুপোলি পর্দার বাইরে বাস্তবে অবশ্য পাসি-দের জীবন সমস্যাদীর্ণ। তবু কিছু মানুষ এখনও এই পেশাকে ভুলতে পারেননি। শীত পড়তেই বাংলার বিভিন্ন জেলায় তাঁরা ছড়িয়ে পড়েন কাজের সন্ধানে। গত বিশ বছর ধরে শীতকালে এরকমই একদল পাসি তাঁদের সাজ সরঞ্জাম নিয়ে চলে আসেন পূর্ব বর্ধমানেও। এখানে গাছ থেকে রস কেটে বার আনেন। তার পর জ্বাল দিয়ে গুড় বা পাটালি তৈরি করেন। এই প্রক্রিয়া একইসঙ্গে কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ।
খাঁটি গুড়ের সন্ধানে পূর্ব বর্ধমানে ভিড় জমান অনেক ক্রেতাই। প্রতি বছরের মতো এখানে এ বারও এসেছেন প্রবীণ ময়জ্জুদ্দিন শেখ। জানালেন, ৭০ টি গাছ লিজ নিয়েছেন। একটা গাছ থেকে রস পাওয়ার জন্য প্রায় মাসখানেক অপেক্ষা করতে হয়। তারপর রস পাওয়ার পালা।
আরও পড়ুন: বক্তব্যের অনেকটাই হিন্দিতে, আলোচনা
খেজুর রস সংগ্রহকারী তরুণ মিন্টু শেখ জানান, ভোর থেকে এসে কাজে লাগতে হয় তাঁদের। প্রায় চার পাঁচ ঘণ্টা জ্বাল দিয়ে তবে ঝোলাগুড় পাওয়া যায়। আবার সেই গুড়কে আবার জ্বাল দিয়ে কাপড়ে মেলে ছাঁচ দিয়ে পাটালি তৈরি হয়।
এখানে প্রায়ই গুড় কিনতে আসেন রাধারমণ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে ভাল এবং খাঁটি গুড় পাওয়া যায়। দামও কিছুটা কম। এখানকার গুড় খুবই সুস্বাদু।’’
পাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেল এ বারের বাজারদর ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজির আশেপাশে। তবে এ বার ক্রেতাদের মধ্যে চাহিদা ভাল। তাই আপাতত পারদ নামতেই আশার আলো দেখছেন নলেন গুড়ের কারবারিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy