কুমোরপাড়ায় চলছে প্রতিমা তৈরি। ছবি: পাপন চৌধুরী
বেশি রোজগারের আশায় প্রতিমা তৈরির কাজে ভিন্-রাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন দক্ষ কারিগরেরা। এই অবস্থায় প্রতিমার গুণগত মান ধরে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন বলে জানাচ্ছেন পশ্চিম বর্ধমানের মৃৎশিল্পীদের অনেকেই। ফলে, ক্রেতা হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি, বাজার নষ্টের আশঙ্কাও করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে অবস্থার সামাল দিতে প্রতিমা-সজ্জার কাজে হাত লাগিয়েছেনবাড়ির মহিলারা।
কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর বাজার ছিল না সে ভাবে। প্রতিমা বিক্রি কমেনি, কিন্তু পুজো উদ্যোক্তারা বাজেট কাটাছাঁট করায় তা অনেক কম দামে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বার বাজার তুলনামূলক ভাবে ভাল। কিন্তু দক্ষ কারিগরের অভাবে দেখা যাচ্ছে বলে জানান মৃৎশিল্পীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাঁশের কাঠামো তৈরি করে খড় বাঁধার পরে মাটির প্রলেপ দেওয়া, প্রতিমার চুল তৈরি, রঙের প্রলেপ দেওয়া এবং সর্বোপরি থার্মোকলের সজ্জার জন্য খুবই দক্ষ কারিগর প্রয়োজন। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে, মহিশীলা কলোনিতে রয়েছে কুমোরপাড়া। এ ছাড়া, নিয়ামতপুর, আসানসোলের রামধনি মোড়, সালানপুরের দেন্দুয়াতেও তৈরি হয়েছে কয়েকটি কুমোর পাড়া।
মহিশীলার মৃৎশিল্পী শ্রীকৃষ্ণ রুদ্রপাল জানান, গত প্রায় ৬৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, “এ বার বাজার ভালই। কিন্তু কারিগরের অভাবে রয়েছে চাহিদা মতো প্রতিমা তৈরি করতে পারছি না।” তিনি জানান, পুজোর এই দু’মাস নদিয়া, হুগলি-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে দক্ষ কারিগর ভাড়া করে আনা হয়। ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয় তাঁদের। শ্রীকৃষ্ণেরপর্যবেক্ষণ: “এ বার ওই কারিগরেরা বেশি রোজগারের আশায় মুম্বই, ভূপাল, সুরাট ও বেঙ্গালুরুতে চলে গিয়েছেন। সেখানে দু’মাস কাজ করে ওঁরা ৭০-৭৫ হাজার টাকা পাচ্ছেন।” সমস্যার কথা জানাচ্ছেন, ওই এলাকারই মৃৎশিল্পী অভিজিৎ রুদ্রপালও। বলেন, “এখন যা অবস্থা, তাতে বাড়ির লোকজন সবাই মিলে প্রতিমার গুণগত মান বজায় রাখার চেষ্টা করছি।”
দেন্দুয়ার বাসিন্দা কৈবর্ত্য পাল জানান, তাঁর অন্তত ছ’জন কারিগর দরকার। পেয়েছেন মাত্র তিন জন। তিনি বলেন, “বেশি টাকা দিয়ে কারিগর আনা সম্ভব নয়। কারণ, পুজোর উদ্যোক্তারা প্রতিমার দাম বাড়াচ্ছেন না।” ফলে, অদক্ষ কারিগর দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। কারিগর-সমস্যা এ বারেই প্রথম, জানাচ্ছেন নিয়ামতপুরের মৃৎশিল্পী বাবলু রুইদাসও। বাবলুর সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন তাঁর মেয়ে, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া দিপালী রুইদাস। দিপালী বলে, “এখন স্কুলের চাপ কম। তাই বাবার সঙ্গে ঠাকুর তৈরি করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy