Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Employment

অষ্টমের পদে আবেদন স্নাতক, স্নাতকোত্তরদের

বন দফতর সূত্রে জানা গেল, শুধু পশ্চিম বর্ধমানেই আবেদনের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি!

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ০২:১৮
Share: Save:

পদ, বন সহায়ক। প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা, অষ্টম শ্রেণি। রাজ্যে শূন্যপদ, ২,০০০টি। কিন্তু বন দফতর সূত্রে জানা গেল, শুধু পশ্চিম বর্ধমানেই আবেদনের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি! শুধু তা-ই নয়, আবেদনপ্রার্থীদের অধিকাংশই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ! এই তথ্য সামনে আসার পরেই রাজ্যের চাকরির বাজারের হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন যুব সংগঠন।

বন দফতর সূত্রে জানা গেল, সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা বেতনে চুক্তিভিত্তিক পদে নিযুক্তদের মূল কাজ, বনভূমি রক্ষা, হাতি তাড়ানো, গাছ কাটার খবর পেলে সেখানে নজরদারি চালানো প্রভৃতি। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জেলায় স্থায়ী বসবাসকারী শুধু নিজের জেলার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্র ‘স্ক্রুটিনি’র কাজ শেষ হলে, প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে ডাকা হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবেন নির্দিষ্ট জ়োনের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন সদস্যের ইন্টারভিউ বোর্ড। জেলার সহকারী বনপাল শুভাশিস সরকার বলেন, ‘‘১০ অগস্ট পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এ বার স্ক্রুটিনি হবে।’’

কিন্তু অষ্টম শ্রেণির যোগ্যতামানের পদে, এত সংখ্যক উচ্চশিক্ষিতের আবেদনের কারণ কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবেদনকারী সালানপুরের জেমারি অঞ্চলের বাসিন্দা বাণিজ্য শাখায় স্নাতক পরিতোষ অধূর্য্য বলেন, ‘‘চাকরির যা বাজার তাতে এখন আর বাছবিচার করার অবস্থা নেই।’’ হিরাপুরের কালাজড়িয়ার বাসিন্দা নিত্যানন্দ মাজি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক পাশ করেছি তিন বছর আগে। এসএসসি-তে চাকরি পাইনি। তাই এখানে আবেদন করেছি।’’

এই পরিস্থিতিতে বামপন্থী যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কোনও কাজই ছোট নয়। কিন্তু রাজ্যের বেকারদের জন্য কাজের বাজার কেমন, তা এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট।’’ ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘রাজ্যে চাকরি থাকলে এখানকার শিক্ষিতদের ভিন্-রাজ্যে ছুটতে হত না। চাকরি যে নেই, তা এই তথ্যে পরিষ্কার।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রূপেশ যাদব।

বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি বন দফতর ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক পরিমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, “জেলার অনেকেই এত দিন ভিন্ রাজ্যে বা অন্য জেলায় গিয়ে কাজ করতেন। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ‘রিভার্স মাইগ্রেশন’ ঘটেছে। তাঁদের একটা বড় অংশ এই পদের জন্য আবেদন করায় চাপ আরও বেড়েছে।”

এ দিকে, বন দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাস থেকে ‘স্ক্রুটিনি’র কাজ শুরু হতে পারে। বেশির ভাগ আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় আবেদনপত্র বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা কম। সে হিসেবে সপ্তাহে ছ’দিন দৈনিক ১০০ জন করে আবেদনপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নিতে হলে জেলায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে কম করে আড়াই বছর লাগবে বলে প্রাথমিক অনুমান বন দফতরের কর্তাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Employment Forest Department Job
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy