রামগোপালপুরের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র
‘ডায়াবিটিস’ নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত হাঁটা প্রয়োজন। কিন্তু বেশির ভাগ রোগীই নানা কারণে তা করে উঠতে পারেন না। এমন রোগীদের জন্য উপায় বার করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সপ্তাহে এক দিন ‘সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে’ গিয়ে কমপক্ষে আধ ঘণ্টা ‘চিকেন ডান্স’ করতে হবে তাঁদের।
ইতিমধ্যে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করেছে গলসি ১ ব্লকের রামগোপালপুরের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতি সোমবার আধ ঘণ্টা ধরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেলথ অফিসার ও আশাকর্মীদের সঙ্গে মন খুলে নাচছেন রোগীরা। জানা গিয়েছে, গ্রামের ডায়াবিটিস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যেই গড়ে উঠেছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে।
চিকিৎসকেরা জানান, হাত ছড়িয়ে, খুব আস্তে আস্তে লাফিয়ে পাখিদের মতো নাচকে ‘চিকেন ডান্স’ বলে। একা বা দল বেঁধে নির্দিষ্ট সুরের সঙ্গে এই নাচ করা যায়। বর্ধমান শহরের এক এন্ডোক্রিনোলজিস্ট অতন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এই নাচ শরীরের জন্য খুবই উপকারী। মেদ কমে। প্রতিটি অঙ্গের নড়াচড়া হওয়ায় সুগার ও খারাপ কোলেস্টোরল কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। গানের তালে তালে এই নাচ মানসিক চিন্তা কমাতেও সাহায্য করে।’’
পুরষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে রয়েছে রামগোপালপুর ও উচ্চগ্রাম উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। রামগোপালপুর কেন্দ্রে শিল্ল্যা, বীরিংপুর, কুমারপুর, করকডাল, বামুনাড়া, নবখণ্ড, রামগোপালপুর-সহ প্রায় দশটি গ্রামের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার বাসিন্দা নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে ৩৭৩ জন ডায়াবিটিস ও হাই প্রেসারের রোগীর রোগীর চিকিৎসা চলছে সেখানে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের বেশির ভাগেরই বয়স চল্লিশের বেশি। বিভিন্ন কারণে নিয়মিত হাঁটার সময় বার করতে পারেন না তাঁরা। ফলে, নিয়ন্ত্রণে থাকে না সুগার বা প্রেসার। রামগোপালপুরের কমিউনিটি হেলথ অফিসার পায়েল রায় বলেন, “ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য হাঁটা খুবই প্রয়োজন। হাঁটলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। গ্রামের রোগীদের প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে এই নাচ চালু করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, অনেকেরই হাঁটতে ভাল লাগে না। সেই একঘেয়েমি কাটিয়ে শরীরকে তরতাজা রাখে এই নাচ। ডায়াবিটিস আক্রান্ত শেখ আবু হোসেন, উৎসবেন্দু দে-রা জানান, “প্রথম প্রথম নাচতে অসুবিধা হচ্ছিল। সঙ্কোচও হচ্ছিল। কিন্তু এখন শরীর অনেকটাই হাল্কা লাগছে।’’
বিএমওএইচ শেখ ফারুক হোসেন বলেন, “ডায়াবিটিস বা প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে দীর্ঘদিন সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব। তাই রোগীকে যেমন পরিমিত খেতে হবে, তেমনি কায়িক শ্রম করতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা প্রয়োজন। তাই যাঁরা কায়িক শ্রম করেন না বা হাঁটার সময় পান না তাঁদের জন্য এই চিকেন ডান্স খুবই উপকারী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy