Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

ডোমের পদেও স্নাতকোত্তর প্রার্থী

চাকরি শ্মশানঘাটে শবদাহ করার। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই বর্ধমান পুরসভার নির্মল ঝিলের শ্মশানঘাটে ডোম পদের পরীক্ষায় বসতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু অনার্সে স্নাতক, স্নাতকোত্তর তো বটেই তথাকথিত ‘উচ্চ শ্রেণি’রাও পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবেদন করেছেন। মোট চাকরিপ্রার্থী ৫৪ জন!

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৬
Share: Save:

চাকরি শ্মশানঘাটে শবদাহ করার। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই বর্ধমান পুরসভার নির্মল ঝিলের শ্মশানঘাটে ডোম পদের পরীক্ষায় বসতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু অনার্সে স্নাতক, স্নাতকোত্তর তো বটেই তথাকথিত ‘উচ্চ শ্রেণি’রাও পরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবেদন করেছেন। মোট চাকরিপ্রার্থী ৫৪ জন!

বর্ধমান পুরসভার দাবি, রবিবার ওই পদে পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দেখে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। এত জনের পরীক্ষা কী পদ্ধতিতে হবে তা নিয়েও চিন্তায় পুর কর্তৃপক্ষ।

শহরের বাংলা অনার্সের এক যুবক বলেন, “ডোমের চাকরি তো তাই ভেবেছিলাম প্রতিযোগিতা কম হবে। বাড়িতে কিছু না বলে চুপচাপ দরখাস্ত করেছিলাম।’’ আর এক স্নাতকোত্তর যুবকের কথায়, “চাকরি পাওয়াটা খুব জরুরি ছিল। তাই কোথায় চাকরি, সেটা আর দেখিনি। কিন্তু একটা ডোমের পদেও ৫৪ জন আবেদন করবেন, সেটা ভাবিনি।’’

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, রবিবার করণিক, চালক-সহ চারটি পদে নিয়োগের পরীক্ষা হয়। পুরসভার সচিব জয়রঞ্জন সেন বলেন, “স্নাতক, স্নাতকোত্তর পাশ যুবকরাও ডোম পদের জন্য আবেদন করেছেন। ৫৪ জন আবেদনকারীর জন্যে আমাদের লিখিত ও মৌখিক—দু’রকমই পরীক্ষা নিতে হবে। এ ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি এখনও ঠিক করতে পারেনি কোন পদ্ধতিতে বা কী ভাবে ডোম পদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তাঁদের মতানৈক্যের জন্যই পিছিয়ে যায় রবিবারের পরীক্ষা।

এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় সরকারি চতুর্থ শ্রেণির পদের নিয়োগের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, স্নাতক-স্নাতকোত্তর এমনকি, পিএইডি পড়ুয়ারাও আবেদন করেছেন। মেডিক্যাল কলেজে শব ব্যবচ্ছেদ করার জন্যেও উচ্চ শিক্ষিতদের আবেদন করার নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মৃতদেহ পোড়ানোর কাজে শিক্ষিত যুবকদের দরখাস্ত করার ঘটনা নজিরবাহীন বলেই মনে করছেন সরকারি আধিকারিকেরা। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “এটুকু বলতে পারি আমরা বিস্মিত। ডোম পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা নিতে হবে, এটা ভাবতেই অবাক লাগছে!” পুরসভার নির্মল ঝিলের দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলর অরূপ দাস মনে করেন, ঠিক কী কাজ করতে হবে, সেটা না বুঝেই সম্ভবত ওই রকম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্নরা আবেদন করেছেন।

এই ঘটনায় তৃণমূল সরকারের আমলে চাকরির হাল নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্যের কথায়, “তৃণমূল আমলে চাকরির হাল কতটা খারাপ, তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা হাড়ে হাড়ে টের পেল।’’ বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, “শিক্ষার মান কোথায় নেমে এসেছে, এটাই তার প্রমাণ।’’ যদিও পুরপ্রধানের দাবি, “সামাজিক বাধা কাটিয়ে যে কোনও পদের জন্য আবেদন করার মানসিকতা কাটছে। কোনও কাজই ছোট নয়—এই আপ্তবাক্য মনে রেখে এগিয়ে আসছে যুব সমাজ। এটাই তো সাফল্য।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dead Body Corpses Employment Graduate Jobs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy