Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিশ বাঁও জলে ‘হাব’, অভিযোগ

জায়গার অভাবে শহরের কোথাও ‘পার্কিং জ়োন’ তৈরি করা যায়নি। এ ছাড়া, শহরে নতুন বাজার তৈরির জায়গা নেই। রাস্তায় দাঁড়িয়েই ট্রাক, ট্রাক্টর থেকে জিনিসপত্র তোলা-নামানো হয়। ফলে, রাস্তায় যানজট হয়। এই পরিস্থিতিতে লোকালয়ের বাইরে ‘লজিস্টিক হাব’ তৈরির পরিকল্পনা নেয় এডিডিএ।

লজিস্টিক হাব পুরোপুরি চালু হবে কবে, তা নিয়ে সংশয়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

লজিস্টিক হাব পুরোপুরি চালু হবে কবে, তা নিয়ে সংশয়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:২৮
Share: Save:

প্রায় এক দশক আগে ‘লজিস্টিক হাব’ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত রানিগঞ্জের বাঁশড়ায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ‘লজিস্টিক হাব’-এর অর্ধেকেরও বেশি কাজ বাকি।

প্রায় এক দশক আগে, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এডিডিএ) একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে ‘বেঙ্গল সৃষ্টি ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিমিটেড’ তৈরি করে। পরিকল্পনা নেওয়া হয়, আসানসোল, দুর্গাপুরে আবাসন প্রকল্প এবং রানিগঞ্জে ২৫ একর জমিতে ‘স্কোয়ার প্রজেক্ট’ নামে ‘লজিস্টিক হাব’ তৈরি হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জের মাঝে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার। জায়গার অভাবে শহরের কোথাও ‘পার্কিং জ়োন’ তৈরি করা যায়নি। এ ছাড়া, শহরে নতুন বাজার তৈরির জায়গা নেই। রাস্তায় দাঁড়িয়েই ট্রাক, ট্রাক্টর থেকে জিনিসপত্র তোলা-নামানো হয়। ফলে, রাস্তায় যানজট হয়। এই পরিস্থিতিতে লোকালয়ের বাইরে ‘লজিস্টিক হাব’ তৈরির পরিকল্পনা নেয় এডিডিএ।

দু’টি পৃথক আবাসন প্রকল্প তৈরি হলেও ‘হাব’ এখনও বিশ বাঁও জলে। এডিডিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ‘হাব’-এ অটো মল, একটি বিপণি সংস্থার শো-রুম, হোটেল, গুদাম, ধাবা, পেট্রল পাম্প, ওয়েব্রিজ ও ট্রাক টার্মিনাস তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, ট্রাক টার্মিনাস তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা চালুই হয়নি। মাঝেসাঝে কিছু ট্রাক সেখানে দাঁড়ায়। একটি ধাবা ও একশোটিরও বেশি গুদাম চালু হয়েছে। কিন্তু বাকি কাজগুলি হয়নি।

কিন্তু কেন এই হাল? বেঙ্গল সৃষ্টি সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ীদের তরফে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। তাই, অটো মল-সহ অন্য কাজগুলি থমকে রয়েছে। আগ্রহ অবশ্য নেই কেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন রানিগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্সের উপদেষ্টা রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান। তাঁর কথায়, ‘‘ঠিকমতো প্রচারই হয়নি। ফলে, হাবে কী সুবিধা মিলবে, তা জানেনই না ব্যবসায়ীরা।’’
‘হাব’ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তর কথায়, “তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা না থাকাতেই প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে।’’ বিজেপি নেতা সঞ্জীব মহন্ত আবার পরিকাঠামো এবং উন্নয়নে খামতির জন্যই এই হাল বলে মন্তব্য করেন। তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এডিডিএ সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ব্যবসায়ীরা তাঁদের আমদানি করা সামগ্রী ‘হাব’-এর গুদামে মজুত করে রাখবেন। তার পরে সেখান থেকে ছোট গাড়িতে চাপিয়ে সামগ্রী বাজারে দোকানে নিয়ে আসবেন। ন্যূনতম ভাড়ায় গুদাম দেওয়া হবে। এই গুদাম তৈরির পরিকল্পনা সফল হয়েছে বলে দাবি। ফলে, আরও গুদাম তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে।

কিন্তু বাকি কাজ কবে হবে, জিজ্ঞাসা করা হলে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বেঙ্গল সৃষ্টির প্রজেক্ট হেড নির্মল ঝা অবশ্য বলেন, ‘‘বাকি কাজ সম্পূর্ণ করার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে আরও একটি শো-রুম খোলা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan Ranigunj Logistic Hub
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE