কুমির ধরছেন বনকর্মীরা। অগ্রদ্বীপে। —নিজস্ব চিত্র।
ভাগীরথী থেকে কুমির উঠে আসার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর। কাটোয়ার কালিকাপুর গ্রামে বুধবার কর্দমাক্ত কাশবন থেকে উদ্ধার করা হয় কুমিরটিকে। পরে সেটিকে ভাগীরথীতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কাটোয়া ও কালনা মহকুমা দিয়ে বয়ে যাওয়া ভাগীরথীতে আর কোনও কুমির রয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চায় বন দফতর। তাই দুই মহকুমায় ভাগীরথীতে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানান বন-কর্তারা।
বন দফতর সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া কুমিরটি ফরাক্কা হয়ে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর দিয়ে কাটোয়ার দিকে এসেছিল বলে মনে করছে বন দফতর। তবে সাম্প্রতিক কালে এই প্রথম কাটোয়ায় নদী থেকে ডাঙায় কুমির আসার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভাগীরথীতে আরও কুমির থাকতে পারে কি না, দেখা হচ্ছে বলে জানায় বন দফতর।
বন দফতর সূত্রের খবর, কালিকাপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া কুমিরটিকে প্রথমে কলকাতার দিকে নিয়ে গিয়ে ভাগীরথীর কোনও জায়গায় ছেড়ে আসার পরিকল্পনা ছিল। কিছুটা পথ যাওয়াও হয়েছিল। পরে দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিকেলে ফের দাঁইহাটে ফিরিয়ে আনা হয় কুমিরটি। সেখানে একটি বড় নৌকায় তুলে বনকর্মীরা পাটুলি পার করে ভাগীরথীতে ভাটার অভিমুখে ছেড়ে দেন। তবে নদীতে ছাড়ার আগে কুমিরটির চেহারার মাপ নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, কুমিরটি ১০ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা। পেট প্রায় ৪ ফুট। ওজন প্রায় দেড় কুইন্টাল। পরবর্তীতে কোনও কুমির ধরা পড়লে, এই সব তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে, সেটি এই কুমিরটিই কি না। প্রায় আট ঘণ্টা পরে ছাড়া পেয়ে জলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কুমিরটি দ্রুত নদীর গভীরে চলে যায় বলে জানান বনকর্মীরা।
বন দফতরের কর্তাদের মতে, এই ধরনের কুমির সাধারণত মিষ্টি জলে চার-পাঁচটি কাছাকাছি থাকে। কয়েক কিলোমিটার ব্যবধানে খাবারের সন্ধানে কখনও জলের গভীরে আবার কখনও নদীর পাড়ে ভাটা অভিমুখে ঘুরতে থাকে।
কখনও উজানের দিকে যায় না। সেই হিসেবে, কুমিরটি ভাগীরথীতে ফরাক্কা দিয়ে ঢুকে বহরমপুর হয়ে কাটোয়ায় চলে এসেছে বলে অনুমান। মূলত জলে ভেসে যাওয়া মরা প্রাণী খাওয়া ও নদীর পাড়ে এসে শিকার করাই এদের লক্ষ্য থাকে।
তাই কালিকাপুর গ্রামে খাবারের সন্ধানেই কুমিরটি দীর্ঘক্ষণ ওত পেতে বসেছিল বলে অনুমান বনকর্মীদের।
গত কয়েক মাস ধরেই কাটোয়া ও কালনায় কুমিরের দেখা মিলছে। অজয় ও ভাগীরথীর সঙ্গমস্থল কাটোয়ার শাঁখাইয়ে বছর দুয়েক আগে কুমির দেখা যায়। সেই সময়ে দাঁইহাট, অগ্রদ্বীপ, পাটুলি হয়ে কুমিরটি হুগলির দিকে চলে গিয়েছিল। গত বছরের এই সময়ে পূর্বস্থলীর মির্জাপুরে কুমিরের দেখা মেলে। মাসখানেক ধরে বনকর্মীরা নদীতে নজরদারি চালান। তবে এ বার কাটোয়ার কালিকাপুরে একেবারে জল ছেড়ে ডাঙায় চলে এল কুমির।
বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিংহ বলেন, “উদ্ধার হওয়া কুমিরটিকে অনেকটা ঘুরে ভাগীরথীতেই গভীর জলে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের এলাকায় আরও কুমির থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তাই উদ্ধার হওয়া কুমিরের দেহের মাপ নিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা নদীপথে কড়া নজরদারি চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy