আগুনের-গ্রাস: পুড়ে যাওয়া কারখানা। নিজস্ব চিত্র
শেষপর্যন্ত বৃষ্টির জন্যই আশপাশের বাড়িগুলিতে ছড়াতে পারেনি আগুন। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বস্তা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরে এমনটাই মনে করছেন দমকল কর্মীরা।
সোমবার বিকেলে বেচারহাটে ওলাইচণ্ডী মন্দিরের পাশে ওই কারখানায় আগুন লাগে। আগুনের শিখা প্রায় ২৫ ফুট ছোঁয়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। তবে অভিযোগ, খবর দেওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে দমকল প্রথমে একটি ইঞ্জিন নিয়ে আসে। আগুনের তীব্রতা দেখে পরে আরও ইঞ্জিন আসে। দমকল জানায়, ১১টি ইঞ্জিনের সাহায্যে সাত ঘণ্টায় আগুন আয়ত্তে আনা হয়।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবার পর্যন্ত চলে আগুন নেভানোর কাজ। আগুন নিভে গিয়েছে বলে প্রথমে দমকল কর্মীরা ফিরে গেলেও ৫টা নাগাদ ফের আগুনের শিখা বাড়তে থাকে। আগুন নেভে এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ আগুন নিভিয়ে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ফিরে আসে। দমকলের বর্ধমান বিভাগীয় আধিকারিক তরুণকান্তি সেন বলেন, “আগুনের কারণ এখনও জানা যায়নি। জেলাশাসক রিপোর্ট চেয়েছেন। তাঁকেও জানিয়েছি, ফরেন্সিক রিপোর্ট ছাড়া কারণ ব্যাখা সম্ভব নয়।”
দমকলের কর্মীরা অবশ্য মনে করছেন, কারখানায় প্লাস্টিকের পাত্রে নানা রকম রাসায়নিক রয়েছে। বস্তা তৈরির সময়ে যন্ত্র থেকে আগুন ছিটকে তাতে পড়াতেই হয়তো আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা না করে বেরিয়ে পড়েন। তার উপরে বিপত্তি বাড়ে ভিতরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে দমকল কর্মীরা জানাচ্ছেন, ইঞ্জিনের সংখ্যা বাড়লেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। তখনই জোরে বৃষ্টি আসায় আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে।
দমকলের এক কর্মী বলেন, “আগুন আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছিল। তবে বৃষ্টিতে আগুনের শিখা বাড়তে পারেনি।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাঁরা এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন যে রাতভর রাস্তাতেই ছিলেন। এমনকী, বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার পুকুর ও সেচখালে ডুবিয়ে রেখেছিলেন। কারখানার পাশেই বাড়ি সুপ্রসাদ বারিকদের। প্রয়োজনীয় নথি ও জিনিসপত্র নিয়ে পড়শির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। গৃহকর্ত্রী আরতিদেবী বলেন, “ভয়ঙ্কর রাত কাটালাম। পড়শিরা আমাদের তো বটেই দমকলকেও নানা ভাবে সাহায্য করে বিপদের হাত থেকে বাঁচালেন।”
আগুনে ক্ষতি হয়েছে কারখানা লাগোয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেরও। তবে তার পরেও এ দিন ওই কেন্দ্রে রান্না হয়েছে। সেখানকার কর্মী শোভা মণ্ডল বলেন, “গোটা পাড়া বিধ্বস্ত। এই অবস্থায় আমরা কেন্দ্র খুলে সাহস জোগাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy